গোয়ার নৈশক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে উঠছে গাফিলতির অভিযোগ। ক্লাবের অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক ছিল তো? প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই নৈশক্লাবে অগ্নি নিরাপত্তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। ছিল না দমকলের ছাড়পত্রও (এনওসি)! তার পরেও কী ভাবে দিনের পর দিন ক্লাবটি চলছিল, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
গোয়ার অগ্নিনির্বাপন এবং জরুরি পরিষেবার ডিরেক্টর নীতিন ভি. রাইকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ক্লাবটির অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে জানান, প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র ছিল না ক্লাবটির। কী ভাবে ওই ক্লাবে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রাথমিক ধারণা গ্যাস সিলিন্ডার ফেটেই এই অগ্নিকাণ্ড। তবে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান রাইকার।
রাইকার জানান, শনিবার রাতে ওই ক্লাবে পার্টি চলছিল। ডান্স ফ্লোরে তখন একসঙ্গে অনেকে নাচছিলেন। মেতে ছিলেন আনন্দে। সেই সময়ই আগুন লাগে। ক্লাবের কাঠের কাঠামোয় দ্রুত আগুন ছড়াতে থাকে। ভয়ে সকলেই এদিক ওদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। অনেকে পৌঁছে যান ক্লাবের বেসমেন্টে। আগুন ধরার সঙ্গে সঙ্গে ধোঁয়ায় ভরে যায় ক্লাবের অনেকাংশ। বেসমেন্টের রান্নাঘরে গিয়ে আটকে পড়েন অনেকে। সেখান থেকে বার হওয়ার উপায় ছিল না। ফলে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
দমকল দফতরের বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুসরণ করেননি ওই ক্লাব কর্তৃপক্ষ, দাবি রাইকার। ছিল না পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। ক্লাবটি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রও ছিল না কর্তৃপক্ষের কাছে। তার পরেও ক্লাবে কী ভাবে পার্টি চলছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন:
গোয়ার বাগা সমুদ্রসৈকতের কাছে আরপোরায় জনপ্রিয় নৈশক্লাব বির্চে শনিবার রাত ১২টার পরে সেখানে আচমকা আগুন লেগে যায়। সাড়ে ১২টার নাগাদ খবর যায় দমকলের কাছে। আধ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাইকার কথায়, ‘‘অসুস্থ ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।’’
গোয়া পুলিশ জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৫। মৃতদের মধ্যে চার জন পর্যটক, ১৪ জন ক্লাবেরই কর্মী। তবে বাকি সাত জনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিহতদের পরিবার পিছু দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেন তিনি। আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথাও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সবন্ত এই ঘটনার পর সমাজমাধ্যমে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। সব রকম সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্লাবের মালিক এবং জেনারেল ম্যানেজারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে।