Advertisement
E-Paper

গোয়া অগ্নিকাণ্ড: নাচগান চলছিল নৈশক্লাবের দোতলায়, তখনই আগুন! আটকে পড়েন অনেকে, বেশির ভাগ মৃত্যু ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে

মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাবন্ত ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। নৈশক্লাবের মালিক এবং ম্যানেজারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ২৫। তাঁদের মধ্যে ১৪ জন হোটেলকর্মী, চার পর্যটক রয়েছেন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:০২
দাউ দাউ করে জ্বলছে গোয়ার সেই নাইটক্লাব। ছবি: পিটিআই।

দাউ দাউ করে জ্বলছে গোয়ার সেই নাইটক্লাব। ছবি: পিটিআই।

রাত তখন শনিবার সাড়ে ১২টা। সপ্তাহের শেষ দিনগুলিতে এমনিতেই নৈশক্লাব, পাব এবং রেস্তরাঁগুলিতে ভিড় থাকে। উত্তর গোয়ার আরপোরা গ্রামের ওই নৈশক্লাবেও ভিড় ছিল যথেষ্ট। ক্লাবের দোতলায় নাচগানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ক্লাবের সদস্য, কর্মী এবং পর্যটক মিলিয়ে প্রায় ১০০ জনের মতো ছিলেন। সকলেই তখন নাচগানে মশগুল।

হায়দরাবাদ থেকে গিয়েছিলেন ফতিমা শেখ। তিনিও ওই নৈশক্লাবে ছিলেন। সংবাদসংস্থা পিটিআইকে তিনি বলেন, ‘‘দোতলায় নাচগান চলছিল। আমিও সেখানে ছিলাম। হঠাৎ শুনলাম আগুন লেগেছে। যেখানে নাচগান হচ্ছিল, তার ঠিক পাশেই আগুন লেগেছিল। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সকলে। তার পর যা হয়। সকলে একসঙ্গে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামার চেষ্টা করেন।’’

ফতিমা আরও জানিয়েছেন, বেশিরা ভাগই বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন। কিন্তু আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল যে, কয়েক জন বেসমেন্টে আশ্রয় নেন। আগুন ক্রমে বাড়ছিল। তার সঙ্গে কুণ্ডলী পাকানো ধোঁয়া। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। যতটা দূর পেরেছেন সরে গিয়েছিলেন পর্যটকেরা। কিন্তু যাঁরা ভিতরে আটকে পড়েছিলেন, তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ফতিমা বলেন, ‘‘বেসমেন্টে রান্নাঘর ছিল। সেখানে কাজ করছিলেন কয়েক জন কর্মী। আশ্রয় নিতে কয়েক জন পর্যটক সেখানে ঢুকে পড়েন।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, ক্লাবটির সৌন্দর্যায়নের জন্য তালপাতা দিয়ে সাজানো হয়েছিল। ফলে সেগুলিতে আগুন ধরে যাওয়ায়, ক্লাবের অন্যত্র সেই আগুন দ্রুতগতিতে ছড়াতে শুরু করে।

আরপোরা নদীর ধারে রয়েছে এই নৈশক্লাব। ক্লাবে প্রবেশ এবং বার হওয়ার রাস্তাও খুব একটা চওড়া নয়। ফলে দমকলের গাড়িকেও সেখানে ঢুকতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। ৪০০ মিটার দূরেই দমকলের গাড়ি দাঁড় করাতে হয়। তার পর দমকলকর্মীরা আগুন নেবানোর কাজ শুরু করেন। কিন্তু তত ক্ষণে ক্লাবের বেশির ভাগ অংশই পুড়ে গিয়েছিল। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ক্লাবের বেসমেন্ট থেকে কয়েক জনকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। চার জনকে ঝলসানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, বেসমেন্টের রান্নাঘরে আটকে পড়া ২৫ জনেরই মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চার জন পর্যটক রয়েছেন। দমকল সূত্রে খবর, বেশির ভাগেরই মৃত্যু হয়েছে ধোঁয়ার কারণে দমবন্ধ হয়ে। তাঁদের মধ্যে ১৪ জন হোটেলের কর্মী, চার জন পর্যটক এবং স্থানীয় কয়েক জন। ১৮ জনের দেহ শনাক্ত করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাবন্ত। ক্লাবের মালিক এবং জেনারেল ম্যানেজারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সাবন্ত বলেন, ‘‘ঘটনার উপর নজর রাখছি। ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৬ জন। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ক্লাবে ভিড় ছিল যথেষ্ট। তা ছাড়া যে জায়গায় আগুন লাগে সেখান থেকে পর্যটকেরা বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বার হওয়ার পথ যথেষ্ট সঙ্কীর্ণ ছিল। ফলে অনেকেই বার হতে পারেনি। কেউ কেউ আগুন থেকে বাঁচতে নীচের তলায় আশ্রয় নেন। কিন্তু সেখানে আটকে পড়েন।

Goa
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy