ফাইল ছবি
হরিদ্বারের ধর্মসংসদে ঘৃণা-ভাষণ নিয়ে অভিযোগ দায়েরের পরে প্রায় ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও কোনও গ্রেফতারি হয়নি।
পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে, কেন সরাসরি খুন এবং গণহত্যার ডাক দেওয়ার পরেও মূল অভিযুক্ত হিসেবে রাখা হল শুধু সদ্য মুসলমান ধর্ম ছেড়ে হিন্দু হওয়া ওয়াসিম রিজভি ওরফে জিতেন্দ্র নারায়ণ ত্যাগীর একার নাম? কেন ‘অন্য’দের বলে এফআইআরে এড়িয়ে যাওয়া হল অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা তথা একাধিক ধর্মীয় বিদ্বেষের ঘটনায় অভিযুক্ত যতি নরসিংহানন্দ, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে খুনের ‘ইচ্ছা’ প্রকাশ করা ধর্মদাস মহারাজ, সংবিধানকে ‘ভুল’ বলা অন্নপূর্ণা মা-সহ বাকি ঘৃণা-ভাষণকারীদের নাম? কেন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ, দেশদ্রোহের মতো অভিযোগে মামলা দায়ের করল না বিজেপি-শাসিত উত্তরাখণ্ডের পুলিশ?
অভিযোগ উঠছে, বিজেপির শীর্ষ নেতাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই এই অভিযুক্তদের কারও বিরুদ্ধেই কড়া ধারায় মামলা করা হয়নি। এর মধ্যেই হরিদ্বার পুলিশের দাবি, ওই বক্তৃতার ভিডিয়ো তাঁরা এখনও হাতেই পাননি! যদিও সেটি গত কাল থেকেই সমাজমাধ্যমে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
হরিদ্বার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের মধ্যেই এ দিন জড়তা ঝেড়ে সাধু-সাধ্বীদের ঘৃণা-ভাষণ ও গণহত্যার ডাকের তীব্র নিন্দা করেছেন রাহুল গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে বিধানসভা ভোটের আগে হিন্দু ভোট হারানোর ‘ভয়ে’ই কংগ্রেস বিষয়টি নিয়ে সে ভাবে মুখ খুলছে না বলে গত কালই সরব হয়েছিল সমাজমাধ্যম। এ দিন রাহুল টুইটারে বলেন, ‘‘হিন্দুত্ববাদীদের কাজই হল ঘৃণা ও হিংসা ছড়ানো। হিন্দু-মুসলমান-শিখ-খ্রিস্টান সকলেই তার দাম চোকায়। কিন্তু আর নয়।’’ আর প্রিয়ঙ্কা উত্তরাখণ্ডের ঘৃণাভাষণে অভিযুক্তদের ‘কঠোরতম শাস্তি’ দাবি করার পাশাপাশি যে ভাবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে বুকে গুলি করার কথা বলেছেন এক সাধু, তার তীব্র নিন্দা করেছেন। প্রিয়ঙ্কা জানান, প্রকাশ্যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে খুনের কথা বলা এবং অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে হিংসার ডাক দেওয়ার পরেও দোষীদের এখনও মুক্ত থাকা নিন্দনীয়। এই ঘটনা সংবিধান-বিরোধী বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার অবশ্য এখনও হরিদ্বার এবং দিল্লির ঘৃণা ও উস্কানিমূলক বক্তৃতা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে। তবে বিজেপি-ঘনিষ্ঠ অনেকে আজ হরিদ্বারের ঘটনা নিয়ে তৈরি হওয়া সমালোচনার ঝড় থামাতে এমআইএম সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়েইসি-র একটি অসম্পূর্ণ ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। বলা শুরু হয়, ওয়েইসি হিন্দুদের হুমকি দিচ্ছেন। যদিও মূল ভিডিয়োয় দেখা যায়, ওয়েইসি উত্তরপ্রদেশে এক ৮০ বছরের মুসলিম বৃদ্ধের উপরে যোগী সরকারের পুলিশের অত্যাচারের বর্ণনা তুলে ধরে বলছেন, মোদী-যোগী চিরকাল ক্ষমতায় থাকবেন না। সে
দিন এই পুলিশদের কী হবে? বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলে ওয়েইসি নিজেও বলেছেন, হরিদ্বারের ঘৃণাভাষণ থেকে নজর সরাতেই বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারের আইটি সেল তাঁর বক্তৃতার একটি অংশ কাটছাঁট করে মিথ্যে প্রচার করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy