বছরখানেক আগের কথা। দিল্লির রাস্তায় অন্য মহিলার সঙ্গে ঘুরতে দেখা গিয়েছিল বিপিন ভাটিকে। ধরা পড়ে যাওয়ায় পরিবারের হাতে প্রকাশ্য রাস্তায় মারও খেতে হয়েছিল। গ্রেটার নয়ডায় পণের জন্য বধূ খুনের ঘটনায় এ বার জানা গেল এমনটাই।
সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে-র একটি প্রতিবেদনের দাবি, স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৪ সালে দিল্লিতে অন্য এক মহিলার সঙ্গে ঘুরছিলেন বিবাহিত বিপিন। তখনই পরিবারের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ে যান। এর পর প্রকাশ্য রাস্তায় তাঁকে মারধরও করেন পরিজনেরা। স্থানীয়দের আরও দাবি, বিপিন ও তাঁর দাদা রোহিত, দু’জনেই রাতে বেশ দেরি করে বাড়ি ফিরতেন। নিহত নিকির দিদি কাঞ্চনও জানিয়েছেন, প্রায়ই দুই ভাই অনেক রাতে বাড়ি ঢুকতেন। ফোন করলে ধরতেন না। কাঞ্চনের কথায়, ‘‘আমরা কিছু প্রশ্ন করলেই অশান্তি করত। আমরা জানতাম অন্য মহিলাদের সঙ্গে ওদের সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু কিছু বলতে গেলেই আমাদের মারধর করত ওরা।’’
২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বর নিকি এবং তাঁর দিদি কাঞ্চনের বিয়ে হয়। ভাটি পরিবারের দুই ছেলে বিপিন এবং রোহিতকে বিয়ে করেন দুই বোন। পরিবার সূত্রে দাবি, দুই কন্যার বিয়েতে সাধ্যমতো যৌতুক দিয়েছিলেন তাঁদের বাবা ভিখারি সিংহ। স্করপিয়ো গাড়ি, এনফিল্ড বাইক, নগদ, সোনা— নানা উপহার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এত কিছুর পরেও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা খুশি ছিলেন না। আরও পণ চেয়ে প্রায়ই দুই বোনকে মারধর করা হত বলে দাবি। নিকি ও কাঞ্চন মিলে একটি পার্লার চালাতেন। তা-ও পছন্দ ছিল না ভাটি পরিবারের। তাঁদের উপার্জনও কেড়ে নেওয়া হত।
আরও পড়ুন:
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পণের দাবিতে নিকিকে তাঁর স্বামী এবং শাশুড়ি মিলে বেধড়ক মারধর করেন। অভিযোগ, চুলের মুঠি ধরে নিকিকে সিঁড়ি দিয়ে টানতে টানতে নীচে নিয়ে আসেন বিপিন। তার পর গায়ে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। কাঞ্চন বাধা দিতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে দাবি। শুধু কাঞ্চন নন, নিকির খুদে ছেলেও জানিয়েছে, কী ভাবে তার বাবা এবং ঠাকুমা মিলে মাকে খুন করেছেন। ইতিমধ্যে ওই ঘটনার দু’টি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তার ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যায় ধরা পড়েছেন মৃতার শাশুড়ি দয়াবতী। তবে পরিবারের বাকি সদস্যেরা এখনও ফেরার। তাঁদের খোঁজ চলছে।