কোনও রোগী চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন না মানেই সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ আনা যাবে, এমনটা নয়। সম্প্রতি এক প্রসূতিমৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসককে অব্যাহতি দিয়ে এমনটাই জানাল সুপ্রিম কোর্ট।
বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার একটি বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, কোনও রোগী যদি চিকিৎসায় আশানুরূপ সাড়া না দেন কিংবা অস্ত্রোপচারের পরেও যদি তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হয়, তা হলে সে সব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ডাক্তারকে দায়ী করা যায় না। আদালতের যুক্তি, কখনও কখনও সব রকম চেষ্টা সত্ত্বেও একজন ডাক্তারের চিকিৎসা ব্যর্থ হতে পারে। তবে তার অর্থ এই নয় যে কোনও প্রমাণ ছাড়াই সেই ডাক্তারকে চিকিৎসায় গাফিলতির জন্য দোষী সাব্যস্ত করতে হবে। তা ছাড়া, কোনও বিচক্ষণ পেশাদার চিকিৎসক কখনওই জেনেবুঝে এমন কোনও ভুল করবেন না, যাতে রোগীর ক্ষতি হয়। কারণ, তাতে উল্টে সেই চিকিৎসকেরই খ্যাতি প্রশ্নের মুখে পড়বে।
আরও পড়ুন:
সম্প্রতি সন্তানপ্রসবের পর এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। জাতীয় উপভোক্তা অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিশন (এনসিডিআরসি)-এর নির্দেশে ওই ডাক্তার এবং হাসপাতালকে গাফিলতির জন্য দোষী সাব্যস্তও করা হয়। মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলাতেই ওই চিকিৎসককে অব্যাহতি দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তদন্তে দেখা গিয়েছে, হাসপাতালটিতে প্রসব-সংক্রান্ত জটিলতা মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ছিল না। তবে ডাক্তারের চিকিৎসায় কোনও ত্রুটি ছিল, এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি। দুই বিচারপতির বেঞ্চের কথায়, ‘‘এখন চিকিৎসা পেশার খানিক বাণিজ্যিকীকরণ হয়েছে। টাকা উপার্জনের স্বার্থে কিছু ডাক্তার তাঁদের আদর্শ ভুলেছেন। তা সত্ত্বেও, শুধুমাত্র কিছু খারাপ লোকের কারণে গোটা চিকিৎসাব্যবস্থাকে অসৎ কিংবা অদক্ষ বলে দাগিয়ে দেওয়া যায় না।’’