মোট ভোটার কত জন?
ভারতের ২৯টি রাজ্যের এবং কেন্দ্রশাসিত দিল্লি ও পুদুচেরি বিধানসভার মোট নির্বাচিত সদস্য সংখ্যা ৪১২০।
লোকসভার নির্বাচিত সদস্য সংখ্যা ৫৪৩। রাজ্যসভার নির্বাচিত সদস্য সংখ্যা ২৩৩।
অর্থাৎ, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দেবেন মোট ৪৮৯৬ জন সাংসদ ও বিধায়ক।
বিধায়কদের ভোটের মূল্য কী ভাবে নির্ধারিত হয়?
কোনও রাজ্যের জনসংখ্যাকে প্রথমে সেই রাজ্যের বিধায়ক সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা হয়। তার পর সেই ভাগফলকে ১০০০ দিয়ে ভাগ করা হয়। এতে যে সংখ্যা এল, তা যদি পূর্ণ সংখ্যা হয়, তা হলে সেটাই সেই রাজ্যের প্রত্যেক বিধায়কের ভোটমূল্য। যদি পূর্ণ সংখ্যা না হয়, তা হলে নিকটবর্তী পূর্ণ সংখ্যাটিই সেই রাজ্যের প্রত্যেক বিধায়কের ভোটমূল্য।
১৯৭১ সালের জনগণনার ভিত্তিতে বিধায়কদের ভোটমূল্য নির্ধারিত হয়। ২০২৬ সাল পর্যন্ত ওই জনগণনার ভিত্তিতেই বিধায়কদের ভোটের মূল্য নির্ধারিত হবে।
১৯৭১ সালে পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা ছিল ৪ কোটি ৪৩ লক্ষ ১২ হাজার ১১। বিধায়ক সংখ্যা ২৯৪। তাই নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেক বিধায়কের ভোটমূল্য ১৫১। আবার অন্ধ্রপ্রদেশের বিধায়কদের ভোটমূল্য ২৪৮।
আরও পড়ুন: গ্রাম থেকে রাইসিনা হিলে যাত্রা শুরু সাদামাটা, মৃদুভাষী মানুষটির
সাংসদদের ভোটমূল্য কী ভাবে নির্ধারিত হয়?
দেশের সব বিধায়কের সম্মিলিত ভোটমূল্য যা হচ্ছে, সাংসদদের সম্মিলিত ভোটমূল্যও তাই হওয়া উচিত। বিধায়কদের সম্মিলিত ভোটমূল্য ৫ লক্ষ ৪৯ হাজার ৪৭৪। সাংসদদের সম্মিলিত ভোটমূল্যও তাই ধরে নিয়ে ওই সংখ্যাকে সাংসদ সংখ্যা (৭৭৬) দিয়ে ভাগ করা হয়। ভাগফলকে নিকটবর্তী পূর্ণ সংখ্যায় নিয়ে গেলে প্রত্যেক সাংসদের ভোটমূল্য দাঁড়ায় ৭০৮।
ভোটাভুটি ও গণনা:
সাংসদদের ভোটের মূল্যে কোনও তারতম্য নেই। সবার ভোটেরই একই মূল্য। তাই যে প্রার্থী যত বেশি সংখ্যক সাংসদের ভোট পাবেন, তিনি সরল পাটিগণিতেই ততটা এগিয়ে থাকবেন। কিন্তু বিধায়কদের ভোটের ক্ষেত্রে তা হবে না। সিকিমের এক জন বিধায়কের ভোটের মূল্য মাত্র ৭। অর্থাৎ কোনও প্রার্থী যদি সিকিম বিধানসভার সব সদস্যের (৩২) ভোটও পান, তা হলেও তাঁর ঝুলিতে যাওয়া ভোটের মূল্য হবে ২২৪। পশ্চিবঙ্গের মাত্র ২ জন বিধায়কই সেই ভোটমূল্যকে ছাপিয়ে যেতে সক্ষম। অর্থাৎ যে সব রাজ্যের বিধায়কদের ভোটমূল্য বেশি, সেই রাজ্য থেকে বেশি করে ভোট পাওয়া জয়ের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
আরও পড়ুন: রাজনীতির দাবা বারে বারে ঘুঁটি সাজিয়েছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে
সাংসদ এবং বিধায়কদের ভোট মিলিয়ে মোট ভোটমূল্য ১০ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭৮২। জয়ের জন্য প্রয়োজন ৫০ শতাংশের বেশি। অর্থাৎ ৫ লক্ষ ৪৯ হাজার ৪৪২টি ভোট।
প্রথম পছন্দের ভোট গুনেই যদি দেখা যায় কোনও প্রার্থী সেই অঙ্কে পৌঁছে গিয়েছেন, তা হলে তাঁকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। কিন্তু প্রথম পছন্দের ভোট গোনার পরে যদি দেখা যায় কোনও প্রার্থীই ৫ লক্ষ ৪৯ হাজার ৪৪২-এ পৌঁছতে পারেননি, তা হলে শেষ স্থানে থাকা প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে বাদ দেওয়া হয়। তিনি যে প্রথম পছন্দের ভোটগুলি পেয়েছিলেন, সেই সব ব্যালটে দ্বিতীয় পছন্দের ভোট কার দিকে গিয়েছে, তা গোনা হয়। সেই ভোট যোগ করে যে প্রার্থী আগে ৫ লক্ষ ৪৯ হাজার ৪৪২-এ পৌঁছন, তিনিই জয়ী। কিন্তু দ্বিতীয় পছন্দের ভোট গুনেও যদি ফয়সলা না হয়, তা হলে তৃতীয় পছন্দের ভোট গোনা হয়। এই ভাবেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারিত হয়।