Advertisement
E-Paper

দুর্ভাগ্যজনক, কিন্তু ইয়েমেনে নিমিশার ফাঁসি রুখতে আর কিছু করার নেই ভারতের, সুপ্রিম কোর্টকে জানাল কেন্দ্র

নিমিশার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছিল ‘সেভ নিমিশা প্রিয়া অ্যাকশন কাউন্সিল’ নামে একটি সংগঠন। সোমবার শীর্ষ আদালতে ওই মামলার শুনানি হয়।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৫ ১৩:৪৭
নিমিশা প্রিয়া।

নিমিশা প্রিয়া। —ফাইল চিত্র।

ইয়েমেনে বন্দি ভারতীয় নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড রুখতে আর বিশেষ কিছু করার নেই ভারত সরকারের। সোমবার সুপ্রিম কোর্টকে এমনটাই জানালেন কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি। নিমিশার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছিল ‘সেভ নিমিশা প্রিয়া অ্যাকশন কাউন্সিল’ নামে একটি সংগঠন। সোমবার বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ মেটার বেঞ্চে ওই মামলার শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল নিমিশার মৃত্যুদণ্ড প্রসঙ্গে বলেন, “এটা দুর্ভাগ্যজনক। একটা পর্যায় অবধি আমরা যেতে পারতাম এবং তত দূর পর্যন্ত গিয়েওছিলাম।”

নিমিশার ফাঁসি রুখতে কেন্দ্রের অপারগতার কথা জানিয়ে ভেঙ্কটরামানি বলেন, “সরকারের আর কিছু করার নেই। ইয়েমেন নিয়ে স্পর্শকাতরতার বিষয়টি দেখুন। এই দেশটিকে (ইয়েমেন) কূটনৈতিক ভাবে ভারত স্বীকৃতি দেয়নি।” সরকারি স্তরে আর কিছু করা সম্ভব নয় বলেও শীর্ষ আদালতকে জানিয়ে দেন তিনি।

ইয়েমেন সরকার জানিয়েছে, আগামী ১৬ জুলাই নিমিশার ফাঁসি কার্যকর হবে। তবে এত অল্প সময়ের মধ্যে সে দেশের সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চালিয়ে ফাঁসি রদ করানো সম্ভব কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তবে মামলাটি শুনতে সম্মত হয়েছিল দুই বিচারপতির বেঞ্চ। মামলাকারীদের বক্তব্য ছিল, শীর্ষ আদালত কেন্দ্রকে নির্দেশ দিক, যাতে তারা ইয়েমেন সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে নিমিশার মুক্তি নিশ্চিত করতে পারে।

কেরলের পালক্কাড় জেলার বাসিন্দা নিমিশা নার্সের কাজ নিয়ে ২০০৮ সালে ইয়েমেনে গিয়েছিলেন। স্বামী টমি থমাস এবং মেয়েকে নিয়ে ইয়েমেনে থাকতেন তিনি। ২০১৪ সালে তাঁর স্বামী এবং ১১ বছরের কন্যা ভারতে ফিরে এলেও নিমিশা ইয়েমেনেই থেকে গিয়েছিলেন। ইচ্ছা ছিল নিজের ক্লিনিক খুলবেন। ওই বছরই ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আব্দো মাহদির সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাঁর। মাহদি তাঁকে নতুন ক্লিনিক খুলতে সাহায্য করবেন বলে আশ্বাস দেন। কারণ, আইন অনুযায়ী, ইয়েমেনে নতুন ব্যবসা শুরু করতে গেলে দেশীয় অংশীদারের দরকার ছিল নিমিশার। সেইমতো ২০১৫ সালে দু’জন মিলে নতুন ক্লিনিক খোলেন। এর পর থেকেই শুরু হয় দুই অংশীদারের মতবিরোধ।

অভিযোগ, নিমিশার টাকা এবং পাসপোর্ট মাহদি কেড়ে নিয়েছিলেন। মারধর করে নাকি নিমিশাকে মাদকসেবনেও বাধ্য করেছিলেন মাহদি। আইনি কাগজপত্রে নিমিশাকে স্ত্রী হিসাবে পরিচয় দিয়ে প্রশাসনিক সাহায্য পাওয়ার পথও প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই মাহদিকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেন ওই নার্স। নিমিশার দাবি, মাহদিকে ঘুম পাড়িয়ে নিজের পাসপোর্ট পুনরুদ্ধার করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। কিন্তু ওভারডোজ়ের কারণে মৃত্যু হয় মাহদির। এর পর হানান নামে এক সহকর্মীর সঙ্গে মিলে মাহদির দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেন ওই নার্স। ওই মাসেই ইয়েমেন ছেড়ে পালানোর সময় ধরা পড়ে যান নিমিশা। সেই থেকে ইয়েমেনের জেলেই বন্দি রয়েছেন ভারতের যুবতী।

মাহদিকে হত্যার দায়ে ২০১৮ সালে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে ইয়েমেনের আদালত। মৃত্যুদণ্ড পান নিমিশা। এই সাত বছরে পরিবারের তরফে ৩৬ বছর বয়সি নিমিশাকে বাঁচানোর সব রকম চেষ্টা করা হয়েছে। ভারত সরকারের দ্বারস্থও হয় পরিবার। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এমনকি ইয়েমেনের সুপ্রিম কোর্টেও সাজা মকুবের আবেদন করা হয়। গত বছর সেই আবেদনও খারিজ হয়ে যায়।

Nimisha Priya Supreme Court Yemen Execution
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy