Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Inter-Faith Marriages

প্রশ্ন ভিন্‌ ধর্মের বিয়ের নোটিসে

হাইকোর্ট বলেছে, বিয়ের এক মাস আগে ম্যারেজ অফিসারকে দেওয়া নোটিস প্রকাশ্যে আনা হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত বিয়ের পাত্রপাত্রীই নেবেন। বিষয়টি বাধ্যতামূলক হতে পারে না।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:১৭
Share: Save:

ভিন্‌ ধর্মের বিয়েতে যুগলের তরফে দেওয়া এক মাসের নোটিসকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসার বিষয়টি তাঁদের গোপনীয়তা রক্ষা ও মৌলিক অধিকারকে খর্ব করছে বলে জানিয়ে দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। এ নিয়ে একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে হাইকোর্ট আজ বলেছে, বিয়ের এক মাস আগে ম্যারেজ অফিসারকে দেওয়া নোটিস প্রকাশ্যে আনা হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত বিয়ের পাত্রপাত্রীই নেবেন। বিষয়টি বাধ্যতামূলক হতে পারে না। পাত্রপাত্রী যদি বিয়ের নোটিসকে প্রকাশ্যে না আনতে চান, ম্যারেজ অফিসার তা শুনতে বাধ্য থাকবেন। সে ক্ষেত্রে ওই বিয়ে নিয়ে কারও আপত্তি তিনি শুনতে পারবেন না। বিয়ে কী ভাবে সম্পন্ন হবে, সে দিকেই নজর দিতে হবে তাঁকে।

উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের সরকার ধর্মান্তরণ বিরোধী অর্ডিন্যান্স নিয়ে আসার পর থেকে ভিন্‌ ধর্মের পাত্রপাত্রীর বিয়ে আটকাতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বিয়ের আসর থেকে পাত্রপাত্রীকে থানায় নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। গ্রেফতার হয়েছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের যুবকেরা। গত বছরের ২৮ নভেম্বর এই সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্স জারি হওয়ার পর থেকে উত্তরপ্রদেশে এই সংক্রান্ত ১৬টি মামলা হয়েছে। ভিন্‌ ধর্মের প্রেমিককে বিয়ে করতে চাওয়ায় প্রাপ্তবয়স্কা এক যুবতীকে আটকানো হয়েছে— এমন অভিযোগে এলাহাবাদ হাইকোর্টে একটি হেবিয়াস কর্পাস পিটিশন জমা পড়েছিল। এই মামলার শুনানির সময়েই হাইকোর্ট বিয়ের ৩০ দিন আগের নোটিস সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। আদালত বলেছে, বিশেষ বিবাহ আইনে এই নোটিসকে প্রকাশ্যে আনার বিষয়টি বাধ্যতামূলক হতে পারে না। বিয়ে করবেন যাঁরা, বিষয়টি তাঁদের ইচ্ছার উপরে ছেড়ে দিতে হবে। ওই যুগল আদালতে অভিযোগ এনেছিলেন, ৩০ দিন আগের নোটিসের এই বাধ্যবাধকতার বিষয়টি তাঁদের গোপনীয়তা রক্ষা ও বিয়ে করার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে।

এই মামলার রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি বিবেক চৌধরি বলেছেন, নোটিস প্রকাশ্যে আনার বিষয়টি যুগলের স্বাধীন জীবনযাপন এবং গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে। প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ কে কাকে বিয়ে করবেন, সেই সিদ্ধান্তে রাষ্ট্র বা অন্য কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে সেই অধিকার খর্ব হচ্ছে। আদালত মনে করছে, যাঁরা বিয়ে করবেন, তাঁরা ম্যারেজ অফিসারকে জানিয়ে দিতে পারবেন, বিয়ের ৩০ দিন আগে দেওয়া নোটিসটি প্রকাশ্যে আনতে চান কিনা। এই বিষয়ে যদি তাঁদের আপত্তি থাকে, তা হলে ম্যারেজ অফিসার তা প্রকাশ্যে আনতে পারবেন না। বিয়ে নিয়ে কারও আপত্তি থাকলে তিনি তা শুনতে পারবেন না। তবে বিয়ের প্রশ্নে পাত্রপাত্রীর পরিচয়, বয়স, মতামত ম্যারেজ অফিসার জানতে চাইতেই পারেন। সন্দেহ হলে বিস্তৃত তথ্যপ্রমাণও চাইতে পারেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Inter-Faith Marriages Allahabad High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE