সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে সর্বদল বৈঠক শুরু হয়েছে নয়াদিল্লিতে। বৈঠকে যোগ দিয়েছেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। বেলা ১১টায় এই বৈঠক শুরু হওয়ার আগে বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবন ৭, লোককল্যাণ মার্গে যান ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। সরকারের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ভারত-পাক সীমান্তে কী পরিস্থিতি রয়েছে, তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ব্যাখ্যা করেন ডোভাল। ওই সূত্রের দাবি, পাকিস্তান যে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গুলিবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে, তা-ও প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়।
অন্য দিকে, বৃহস্পতিবারই বিভিন্ন মন্ত্রক এবং দফতরের সচিবদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে এই বৈঠক হয় বলে সূত্রের খবর। ওই সূত্রের দাবি, প্রধানমন্ত্রী সব মন্ত্রক এবং দফতরের মধ্যে সমন্বয় বজায় রাখার কথা বলেন।
কেন্দ্রের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সর্বদল বৈঠকে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে কী ভাবে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিগুলিতে প্রত্যাঘাত করা হয়েছে, তা তুলে ধরা হবে। এই সামরিক অভিযানের সম্ভাব্য প্রভাব, যে কোনও পাক হামলার জবাবে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা।
অন্য দিকে, পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী দুই রাজ্য পঞ্জাব এবং রাজস্থানে ‘হাই অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। দুই রাজ্যেই সমস্ত পুলিশকর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। দুই রাজ্যের সঙ্গে পাকিস্তানের যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে, তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বায়ুসেনাকে। এর পাশাপাশি সীমান্তে সন্দেহজনক কিছু দেখলেই বিএসএফ-কে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
রাজস্থানের জোধপুর, কিশনগড় এবং বিকানের বিমানবন্দরে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত অসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আকাশে টহল দিচ্ছে বায়ুসেনার একাধিক যুদ্ধবিমান। বিকানের, শ্রীগঙ্গানগর, জৈসলমের এবং বিকানের জেলায় স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পিছিয়ে গিয়েছে পরীক্ষা।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জবাবে পাকিস্তানে প্রত্যাঘাত করেছে ভারত। সামরিক অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। জবাবে মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বেশ কিছু অংশে প্রত্যাঘাত করা হয়। ভারতীয় সেনার দাবি, পাকিস্তানের ন’টি জায়গায় হামলা চালানো হয়েছে। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জঙ্গিঘাঁটি।