Advertisement
০২ মে ২০২৪

মায়ানমারের সঙ্গে বসবে খাপলাংরা

সে কারণেই এক দিকে যেমন কেন্দ্র, অন্য দিকে রাজ্য সরকারের তরফেও বারবার কন্যাকের কাছে শান্তি আলোচনায় বসার বার্তা পাঠানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই নাগা মহিলা সংগঠনের একটি প্রতিনিধি দল মায়ানমারে গিয়ে খাপলাং নেতাদের সঙ্গে কথাও বলে এসেছেন।

খাপলাং জঙ্গিদের অস্ত্রভাণ্ডারের একাংশ। মায়ানমারের টাগায়। —নিজস্ব চিত্র।

খাপলাং জঙ্গিদের অস্ত্রভাণ্ডারের একাংশ। মায়ানমারের টাগায়। —নিজস্ব চিত্র।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৯
Share: Save:

ভারত সরকারের সঙ্গে নাগা শান্তি আলোচনায় অংশ নিতে এনএসসিএন (খাপলাং) গোষ্ঠী আগ্রহী হলেও আলফা নেতা পরেশ বরুয়ার চাপে সাড়া দিতে পারছেন না খাপলাং-প্রধান খাংঘো কন্যাক। তবে ভারত সরকারের আলোচনার প্রস্তাবে সাড়া না দিলেও মায়ানমার সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষ-বিরতি চুক্তি স্বাক্ষরে সম্মত হয়েছে মূলত মায়ানমার-ভিত্তিক এই নাগা সংগঠনটি।

ভারত সরকার সমস্ত গোষ্ঠীকে এক সঙ্গে নিয়ে দ্রুত নাগা চুক্তি স্বাক্ষর করতে চাইলেও নাগা সরকার মনে করছে খাপলাং গোষ্ঠীকে বাইরে রেখে চুক্তি করলে নাশকতা বা সমস্যা মিটবে না। সে কারণেই এক দিকে যেমন কেন্দ্র, অন্য দিকে রাজ্য সরকারের তরফেও বারবার কন্যাকের কাছে শান্তি আলোচনায় বসার বার্তা পাঠানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই নাগা মহিলা সংগঠনের একটি প্রতিনিধি দল মায়ানমারে গিয়ে খাপলাং নেতাদের সঙ্গে কথাও বলে এসেছেন।

উল্লেখ্য, ১৪ বছর ভারত সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষ-বিরতিতে থেকেও ২০১৫ সালে খাপলাং সেই চুক্তি ভেঙে ফের নাশকতার পথে ফিরে যায়। এ দিকে, মূলত মায়ানমার-ভিত্তিক নাগাদের নিয়ে তৈরি খাপলাং বাহিনীর বিরুদ্ধে ২০০০ সালের পর থেকে মায়ানমার সেনাবাহিনীও কোন অভিযান চালায়নি। সে দেশের সাগাইং ডিভিশনে থাকা খাপলাং শিবিরে শ’পাঁচেক সশস্ত্র জঙ্গি রয়েছে। রয়েছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ভাণ্ডারও। সে কারণেই ২০১২ সালে স্বশাসিত টাগা এলাকায় সংঘর্ষবিরতি নিয়ে মায়ানমার সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছিল খাপলাংরা। কিন্তু ২০১৫ সালে মায়ানমারের আটটি জঙ্গি সংগঠন জাতীয় সংঘর্ষবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও খাপলাংরা তার অংশ হয়নি। কিন্তু ভারতে নিষিদ্ধ হওয়ার পর খাপলাংদের সঙ্গে মায়ানমার সরকার বারবার শান্তি স্থাপনে আগ্রহ দেখিয়েছে। জানুয়ারি মাসে প্যাংলং-এ তৃতীয় জাতীয় শান্তি আলোচনা— ‘ইউনিয়ন পিস কনফারেন্স’-এ খাপলাং গোষ্ঠীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে মায়ানমার সরকার।

খাপলাং মারা গিয়েছেন। দলের ভার এখন খাংঘো কন্যাকের উপরে। খাপলাংদের নেতৃত্বে চলা জঙ্গি সংগঠনগুলির যৌথমঞ্চ ‘ইউএনএলএফডব্লু’ জোটে পরেশ বরুয়ার কর্তৃত্ব বেড়েছে। খাপলাংকে হারিয়ে খানিকটা কোণঠাসা হয়ে পড়া খাপলাংরা সে কারণেই এ বারের মায়ানমার সরকারের আমন্ত্রণ ফেরায়নি। খাপলাং সংগঠন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ইয়াঙ্গনে জাতীয় মৈত্রী ও শান্তি কেন্দ্রে (এনআরপিসি) মায়ানমার শান্তি কমিশনের প্রধান, তিন মিয়ো উইন খাপলাং নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সেখানে পার্বত্য এলাকায় নাগাদের উন্নয়ন ও স্থিতাবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। সরকারের তরফে শান্তি আলোচনার আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণও তাদের কাছে পাঠানো হবে বলে ওই বৈঠকে ঠিক হয়েছে। খাপলাংরা আলোচনায় যোগ দেবে বলে উইনকে জানিয়ে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Myanmar নাগা NAGA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE