অস্থায়ী মহিলা কর্মীদেরও মাতৃত্বকালীন ছুটি দিতে হবে। এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে ওড়িশা হাই কোর্ট। আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, মাতৃত্বকালীন ছুটি সংক্রান্ত অন্য সুযোগসুবিধাও দিতে হবে অস্থায়ী মহিলা কর্মীদের। এই সুযোগসুবিধাগুলি থেকে মহিলা কর্মীদের বঞ্চিত করা ‘মানবতা এবং নারীত্বের প্রতি ঘৃণা’কেই প্রতিফলিত করে বলে মনে করছে আদালত।
ওড়িশা হাই কোর্টের বিচারপতি দীক্ষিতকৃষ্ণ শ্রীপদ এবং মৃগাঙ্কশেখর সাহুর বেঞ্চে মামলাটির শুনানি ছিল। সেখানে আদালতের পর্যবেক্ষণ, দারিদ্র এবং অন্য বিভিন্ন কারণে মহিলারা সরকারি, বেসরকারি বা চুক্তিভিত্তিক কোনও চাকরিতে যোগ দেন। সরকার সকলের জন্য সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করতে পারে না। যদি করা যেত, তবে সেটিই সঠিক উপায় হত। বর্তমান পরিস্থিতিতে যে বেসরকারি ক্ষেত্রে চাকরির সুযোগ বেশি, তা-ও উল্লেখ করেছে আদালত। মামলার শুনানিতে সংস্কৃতে একটি শ্লোকের কথাও তুলে ধরে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ওই শ্লোকের অর্থ, যেখানে মহিলারা সম্মান পান, দেবতারা সেখানেই সন্তুষ্ট নন। সরকারি নীতির ক্ষেত্রেও এই বিষয়গুলির উপরে জোর দেওয়া উচিত বলে জানিয়েছে আদালত।
২০১৬ সালের একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে মামলাটি চলছিল। ২০১৪ সালে অনিন্দিতা মিশ্র নামে এক মহিলা ওড়িশা সরকারের অস্থায়ী কর্মী হিসাবে কাজ শুরু করেন। ২০১৬ সালের অগস্টে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। সন্তানের জন্মের পরে ৬ মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটির আবেদন করেন তিনি। সব নথিপত্র-সহ ছুটির আবেদন করলেও রাজ্য সরকার তা খারিজ করে দেয়। সরকারের তরফে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটির সুবিধা নেই। এর পরে ওড়িশা সরকারের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন মহিলা।
আরও পড়ুন:
হাই কোর্টের একক বেঞ্চ ২০২২ সালে মহিলার পক্ষেই রায় দিয়েছিল। আদালত সেই সময় জানিয়েছিল, অন্যায় ভাবে মামলাকারীকে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। মহিলার মাতৃত্বকালীন ছুটি মঞ্জুর করারও নির্দেশ দিয়েছিল একক বেঞ্চ। তবে ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় ওড়িশা সরকার। এ বার ডিভিশন বেঞ্চও সেই আগের নির্দেশই বহাল রাখল। আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্য সরকার ওই মহিলাকে মাতৃত্বকালীন ছুটি দিতে বাধ্য।