জিএসটি-তে (পণ্য ও পরিষেবা কর) ছাড় মিলতেই দেশ জুড়ে কেনাকাটার ধুম! গত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দেশে নতুন জিএসটি ব্যবস্থা চালু হয়েছে। দাম কমেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক জিনিসের। এই প্রেক্ষাপটে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের দেওয়া একটি পরিসংখ্যান বলছে, সোমবার জিএসটি-র নতুন হার কার্যকর হওয়ার দিনই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে অনলাইনে ১০,৪১১ কোটি টাকার কেনাকাটা হয়েছে। অথচ, তার আগের দিন অর্থাৎ রবিবার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে অনলাইনে ১৫১৪ কোটি টাকার কেনাকাটা হয়েছিল। অর্থাৎ, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে এই মাধ্যম ব্যবহার করে খরচের পরিমাণ ছ’গুণ বৃদ্ধি করেছেন ভারতবাসী।
সোমবার থেকে সমস্ত পণ্যের উপর ৫ শতাংশ বা ১৮ শতাংশ হারে জিএসটি কার্যকর হয়েছে। এত দিন প্রচলিত ১২ এবং ২৮ শতাংশের স্তর দু’টি বাতিল করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে বহু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যেমন কমেছে, তেমনই উৎসবের মরসুমে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে নানা ছাড় ঘোষণা করেছে বিভিন্ন সংস্থা এবং ই-কমার্স সাইট। এই কারণেই কেনাকাটার প্রতি মানুষের ঝোঁক বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান বলছে, মঙ্গলবারও বিভিন্ন ই-কমার্স সাইট থেকে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটার পরিমাণ ছিল বেশ নজরকাড়া। ওই দিন এই মাধ্যম ব্যবহার করে ৭,২৭৪ কোটি টাকার কেনাকাটা হয়। কেবল ক্রেডিট কার্ড নয়, ডেবিট কার্ডের মাধ্যমেও কেনাকাটার পরিমাণ বেড়েছে সোমবার। পরিসংখ্যান বলছে, রবিবার ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে ১৯৩ কোটি টাকার কেনাকাটা হয়েছিল। মঙ্গলবার তা বেড়ে হয়েছে ৮১৪ কোটি টাকা। রবিবার ইউপিআই-এর মাধ্যমে ৬০,৩২০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। মঙ্গলবার তা বেড়ে হয়েছে ৮২,৪৭৭ কোটি টাকা।
দীপাবলি পর্যন্ত বহু ভোগ্যপণ্যের দামের উপরেই কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়। মনে করা হচ্ছে, জিএসটি বাবদ প্রাপ্ত ছাড়ের পাশাপাশি ওই ছাড়কেও কাজে লাগিয়ে সাশ্রয় বৃদ্ধি করতে চেয়েছেন ক্রেতারা। তবে উৎসবের ক্ষণ পেরোলে এতটা চাঙ্গা বাজার পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই।
রবিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, জিএসটি সংস্কারের ফলে দেশবাসীর সঞ্চয় বৃদ্ধি পাবে এবং অনেক পণ্য সস্তা হয়ে যাবে। এর ফলে দেশবাসী নিজেদের পছন্দমতো জিনিস সহজেই কিনতে পারবেন।” জিএসটির এই ‘সাশ্রয় উৎসব’ দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সুবিধা দেবে বলে জানান তিনি। তবে নয়া জিএসটি কার্যকর হলেও বহু পণ্যের ক্ষেত্রে এখনও পুরনো দাম নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে কেন্দ্রের নির্দেশে বিভিন্ন সংস্থা বিবিধ মাধ্যম ব্যবহার করে নতুন দামের বিষয়ে ক্রেতাদের অবহিত করার চেষ্টা করছে।