প্রতীকী ছবি।
ভারতের যাবতীয় ক্ষোভ এবং আপত্তি উড়িয়েই রীতিমতো হইহই করে ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড (ওবর) প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে চিন। ওই প্রকল্পের অন্তর্গত চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (সিপিইসি) গড়ার কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। এই করিডরে প্রস্তাবিত প্রাথমিক ৩৯টি প্রকল্পের মধ্যে ১৯টি ইতিমধ্যেই শেষের মুখে। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের গদর শহরে প্রায় ১৫ কোটি ডলার খরচ করে গড়ে তোলা হচ্ছে পুরোদস্তুর একটি চিনা জনপদ। কূটনৈতিক সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে।
বিষয়টি যথেষ্ট চাপে ফেলেছে সাউথ ব্লককে। ২০২২ সালের মধ্যে এই জনপদ নির্মাণের কাজ শেষ করে ফেলা হবে বলে দাবি চিনের। মোট ৫ লাখ চিনা নাগরিক থাকতে পারবেন, এমন ভাবেই পরিকল্পনা করা হয়েছে জনপদটি। পাকিস্তানের এই বন্দর-শহরে বিভিন্ন বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত চিন। বন্দর আধুনিকীকরণের নামে অত্যাধুনিক কামান-সহ বহু চিনা রণতরী সেখানে সরবরাহ করা হয়েছে। কূটনৈতিক মহলের মতে, বাণিজ্যিক যোগাযোগ বাড়ানোর মোড়কে সেটি আদতে পরিণত হয়েছে চিনা সামরিক ঘাঁটিতে।
এ বার সেই বন্দরের কাছেই যাতে চিনা পেশাদারেরা থাকতে পারেন, তার জন্য চলছে ‘মিনি চিন’ গড়ার তোড়জোর। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এটি হতে চলেছে দক্ষিণ এশিয়ায় চিনের প্রথম উপনিবেশ। সূত্রের খবর, চিন-পাক ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশনের নেতৃত্বে ৩৬ লক্ষ বর্গফুট জমির উপর তৈরি হচ্ছে এই ‘চিনা শহর’। আগে আফ্রিকা এবং মধ্য এশিয়ার বেশ কিছু জায়গায় বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সে দেশের পেশাদারদের জন্য বাড়ি তৈরি করেছে বেজিং। মায়ানমারের উত্তরাংশ এবং পূর্ব রাশিয়াতেও একই ভাবে জমি কিনে নগরী বানিয়েছে চিন, যা নিয়ে স্থানীয় মহলে ক্ষোভ-বিক্ষোভও দেখা গিয়েছে।
পাকিস্তানের পাইপলাইন, রেল, সড়ক, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, শিল্পাঞ্চল, মোবাইল শিল্পে (যেগুলি ওবর-এর অন্তর্গত) ব্যাপক হারে বিনিয়োগ করছে বেজিং। চিন পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরটি বন্ধ করার জন্য এক বছর ধরে দ্বিপাক্ষিক ভাবে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে ধারাবাহিক ভাবে আপত্তি জানিয়ে এসেছে মোদী সরকার। উহানে ঘরোয়া বৈঠকে চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সঙ্গে আলোচনাতেও প্রসঙ্গটি এসেছিল। চিনকে বলা হয়েছিল, যে হেতু পাকিস্তান বেআইনি ভাবে জম্মু ও কাশ্মীরের একটি অংশ দখল করে রেখেছে, ফলে ওই বিতর্কিত এলাকায় তৃতীয় কোনও দেশের কোনও কর্মসূচিকে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে নয়াদিল্লির কোনও অনুরোধেই কান দেয়নি বেজিং। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর আমেরিকার সঙ্গে প্রতিরক্ষা এবং বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনা শুরু হচ্ছে নয়াদিল্লিতে। সেখানে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরে ফের নিজেদের ক্ষোভের কথা জানাবে ভারত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy