টাকার খুব প্রয়োজন। তাই অগ্রিম বেতন চেয়েছিলেন দিল্লির লালকেল্লার সামনে বিস্ফোরণে অন্যতম অভিযুক্ত কাশ্মীরি চিকিৎসক আদিল আহমেদ। ঘটনার মাস দুয়েক আগেই অগ্রিম বেতন চেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করেছিলেন আদিল। তাঁর সেই কথোপকথন (চ্যাট) ফাঁস হয়ে গিয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের কোনও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যই এই টাকার প্রয়োজন পড়েছিল আদিলের। এই তথ্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে। আদিল এখন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) হেফাজতে।
জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন আদিল। ২০২৫ সালের মার্চ মাসে চলে আসেন উত্তরপ্রদেশের সহারানপুরের একটি হাসপাতালে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, মোটা টাকা বেতন পেতেন আদিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও গত সেপ্টেম্বরে অগ্রিম বেতনের জন্য আবেদন করেছিলেন। ব্যক্তিগত ভাবে হাসপাতালের কোনও আধিকারিকের কাছে বার বার সেই টাকার জন্য কাতর আর্জি জানিয়েছিলেন। তবে সম্পূর্ণ চ্যাট তাঁর গ্রেফতারির আগে ফোন থেকে মুছে দেওয়া হয়। গত ৬ নভেম্বর আদিলকে গ্রেফতার করে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ।
আরও পড়ুন:
৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক আধিকারিকের সঙ্গে আদিলের বার্তালাপ প্রকাশিত হয়েছে। কার সঙ্গে চ্যাট, সেই নাম প্রকাশ্যে আসেনি। তাঁর দেওয়া উত্তরগুলিও প্রকাশ করা হয়নি। কেবল আদিল কী বলছেন, প্রকাশ্যে এসেছে। ৫ সেপ্টেম্বর তিনি লেখেন, ‘‘শুভ সকাল স্যর। আমি বেতনের জন্য আবেদন জানিয়েছিলাম। খুব উপকার হত স্যর। টাকার খুব প্রয়োজন।’’ এর পরের একটি মেসেজে আদিল লেখেন, ‘‘দয়া করে আমার অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দিন স্যর। যে অ্যাকাউন্টটা আমি দিয়েছিলাম।’’ ৬ সেপ্টেম্বর ফের আদিল লেখেন, ‘‘শুভ সকাল স্যর। দয়া করে এটা করুন। আমি কৃতজ্ঞ থাকব।’’ পরের দিন আবার তিনি লেখেন, ‘‘যত দ্রুত সম্ভব বেতন দরকার, স্যর। খুব টাকার দরকার। দয়া করুন। খুব উপকার হবে।’’ এর পর ৯ সেপ্টেম্বর আদিল আবার লিখেছিলেন, ‘‘দয়া করে আগামিকাল করে দিন। আমার খুব দরকার, স্যর।’’
শেষ পর্যন্ত অগ্রিম বেতন আদিল পেয়েছিলেন কি না, স্পষ্ট নয়। তবে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, দিল্লিতে বিস্ফোরণ ঘটাতে মোট ২৬ লক্ষ টাকা লেগেছিল। তার মধ্যে অন্তত ৮ লক্ষ টাকা আদিল একাই দিয়েছিলেন। ধৃত অপর চিকিৎসক মুজ়াম্মিল শাকিলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, তাঁদের দলের ‘খাজাঞ্চি’ ছিলেন আদিল। তাঁর কাছে টাকা রাখা থাকত। শুধু দিল্লি নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল অভিযুক্তদের। প্রাথমিক তদন্তের পর তেমনটাই জানা গিয়েছে। গোটা চক্রান্তে জড়িয়ে ছিলেন একাধিক চিকিৎসক। আদিল যে টাকা চাইছিলেন, তা এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যই কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।