কেরলে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে ধরা পড়লেন পশ্চিমবঙ্গের এক পরিযায়ী শ্রমিক। ধৃতের নাম সোনি শেখ। কর্মসূত্রে সপরিবারে কেরলে চলে গিয়েছিলেন ৩১ বছর বয়সি ওই যুবক। স্ত্রী আলপনা খাতুন (২৮)-কে খুন করে তিনি পশ্চিমবঙ্গে পালানোর চেষ্টা করছিলেন বলে দাবি স্থানীয় পুলিশের। তার আগেই কেরলের এর্নাকুলম স্টেশন থেকে সোনিকে পাকড়াও করে পুলিশ।
সোনি এবং তাঁর স্ত্রী আলপনা উভয়েরই বাড়ি মুর্শিদাবাদে। বিয়ের পরে তাঁরা চলে যান কেরলে। সেখানে আইয়ারকুন্নমে নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন দম্পতি। অভিযোগ, যে নির্মীয়মাণ ভবনটিতে তাঁরা কাজ করতেন, তার কাছেই আলপনার দেহ পুঁতে দেন সোনি। আলপনা কবে খুন হয়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, গত শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) স্থানীয় থানায় গিয়ে স্ত্রীর নামে নিখোঁজ ডায়েরি করেন সোনি। পুলিশকে তিনি জানান, তিন দিন ধরে স্ত্রীকে খুঁজে পাচ্ছেন না।
অভিযুক্ত সেই সময় পুলিশকে জানিয়েছিলেন, গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ৮টা নাগাদ বাজারে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন আলপনা। সে দিন সকালে দু’জনে এক সঙ্গেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। সোনি পুলিশকে জানান, পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ কাজ থেকে ফিরে স্ত্রীকে আর দেখতে পাননি তিনি। তবে তাঁর বক্তব্য সন্দেহজনক লাগে পুলিশের। কেন তিনি তিন দিন ধরে অপেক্ষা করছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন জাগে পুলিশকর্মীদের মনে। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে আলপনার কোনও সন্ধান পাওয়া না-গেলে সোনির বয়ানে আরও সন্দেহ বাড়ে পুলিশের।
আরও পড়ুন:
এ অবস্থায় গত শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্তে সহযোগিতার জন্য সোনিকে থানায় ডেকে পাঠান তদন্তকারীরা। কিন্তু তিনি থানায় হাজিরা এড়িয়ে যান। গোপন সূত্রে পুলিশ খবর পায়, দুই সন্তানকে নিয়ে সোনি পশ্চিমবঙ্গে ফেরার চেষ্টা করছেন। ট্রেন ধরার জন্য তিনি সন্তানদের নিয়ে এর্নাকুলম স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছেন বলেও খবর পায় পুলিশ। সেই মতো পুলিশের একটি দল এর্নাকুলম স্টেশনে হানা দিয়ে তাঁকে পাকড়াও করে এবং আইয়ারকুন্নম থানায় নিয়ে আসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।
পুলিশ সূত্রকে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানাচ্ছে, জেরায় ইতিমধ্যে স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করেছেন সোনি। পুলিশ জানিয়েছে, স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল বলে সন্দেহ ছিল সোনির। সেই সন্দেহের বশেই তিনি স্ত্রীর উপর হামলা করেন। প্রথমে লোহার রড দিয়ে তিনি আলপনাকে আঘাত করেন বলে অভিযোগ। তার পরে শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করেন অভিযুক্ত। কোন জায়গায় দেহটি পুঁতে রাখা হয়েছে, স্থানীয় থানার পুলিশ অভিযুক্তকে জেরা করে সেই তথ্যও সংগ্রহ করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, দেহটি উদ্ধারের পর গ্রেফতার করা হবে অভিযুক্তকে।