Advertisement
E-Paper

গোয়েন্দারা ব্যর্থ, তির সরকারকে

জওয়ানদের মৃতদেহ নিয়ে জাতীয়তাবাদ উস্কে দেওয়ার রাজনীতি করছে বিজেপি। কিন্তু পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার পরে গোয়েন্দা ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। ফলে বছরের গোড়ায় কাশ্মীর প্রশ্নে চাপের মুখে পড়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:৪৪
সেনা-অভিযান: কাশ্মীরের লেথপোরায়। সোমবার। ছবি: পিটিআই।

সেনা-অভিযান: কাশ্মীরের লেথপোরায়। সোমবার। ছবি: পিটিআই।

জওয়ানদের মৃতদেহ নিয়ে জাতীয়তাবাদ উস্কে দেওয়ার রাজনীতি করছে বিজেপি। কিন্তু পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার পরে গোয়েন্দা ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। ফলে বছরের গোড়ায় কাশ্মীর প্রশ্নে চাপের মুখে পড়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় পাঁচ সিআরপি জওয়ান নিহত হওয়ার পরে কাশ্মীরে জঙ্গি দমনের কৌশল ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছে। বিশেষত বছরের শেষে আক্রমণের আগাম সতর্কবার্তা থাকা সত্ত্বেও এত ক্ষয়ক্ষতি হল কী ভাবে তা নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনগুলি কাশ্মীরি যুবকদেরও ফিদায়েঁ বা আত্মঘাতী জঙ্গি হিসেবে ব্যবহার শুরু করায় কপালে ভাঁজ পড়েছে শ্রীনগর ও দিল্লির কর্তাদের।

গতকাল শ্রীনগর-জম্মু সড়কের কাছে লেথপোরায় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হামলায় নিহত হন পাঁচ সিআরপিএফ জওয়ান। ফায়দা নিতে তৎপর হয় শাসক শিবির। পাক-বিরোধী জাতীয়তাবাদকে উস্কে দিতে মাঠে নেমে পড়েন বিজেপির নেতারা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘‘আমরা সাহসী জওয়ানদের জন্য গর্বিত। সরকার মৃতদের পরিবারের পাশে রয়েছে।’’

সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা সম্পর্কে এই তথ্যগুলি জানেন? খেলুন কুইজ

অনেকেই একে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হিসেবে দেখছেন। এক সময়ে কার্গিলে যুদ্ধ চলার সময়ে সেনা কফিন ঘিরেও একই ভাবে বিজেপি জাতীয়তাবাদের তাস উস্কে দেওয়ার রাজনীতি করেছিল বলে অভিযোগ বিরোধীদের। মাঝে দেড় দশক কেটে গিয়েছে। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসে ভারত-পাক সীমান্ত নিশ্ছিদ্র করার অঙ্গীকার করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত আশ্বাস দিয়েছিলেন জঙ্গি মুক্ত উপত্যকার। কিন্তু গত এক বছর ধরে লাগাতার অনুপ্রবেশ ও হামলার ঘটনাই বলে দিচ্ছে বাস্তব পরিস্থিতির বিশেষ কোনও হেরফের হয়নি।

এরই মধ্যে গোয়েন্দাদের কাছে দুশ্চিন্তার বিষয় হল এই ধরনের আত্মঘাতী হামলায় স্থানীয় কাশ্মীরি যুবকদের ব্যবহার করার কৌশল। গত কালের হামলায় যুক্ত আত্মঘাতী তিন জঙ্গির মধ্যে দু’জন কাশ্মীরের বাসিন্দা। এর মধ্যে ত্রালের বাসিন্দা ফারদিন খান্ডে আবার জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের কর্মীর ছেলে। তিন মাস আগে ওই তরুণ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে জঙ্গি দলে নাম লেখায়। হামলার আগে একটি ভিডিও-ও প্রকাশ করেছিল সে। ফলে স্বভাবতই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বাবা পুলিশে থাকা সত্ত্বেও ওই জঙ্গির গতিবিধির বিষয়ে বাহিনীর কাছে তথ্য ছিল কি না। দ্বিতীয় জঙ্গি মনজুর পুলওয়ামার বাসিন্দা। তৃতীয় জঙ্গি পাকিস্তানি বলে দাবি বাহিনীর।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি, সাম্প্রতিক অতীতে জইশ বা লস্করের হয়ে আত্মঘাতী হামলা চালাতে পাকিস্তানি জঙ্গিদেরই পাঠানো হয়েছিল। আত্মঘাতী হামলার প্রশ্নে কাশ্মীরিদের উপরে বিশেষ ভরসা রাখত না পাকিস্তানি জঙ্গি চাঁইরা। খুব বেশি হলে তাদের ব্যবহার করা হত পথপ্রদর্শক বা আশ্রয়দাতা হিসেবেই।

কিন্তু গতকালের ঘটনার পরে নতুন ভাবে ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন গোয়েন্দা কর্তারা। তাঁদের মতে স্থানীয় যুবকদের গুরুত্ব বাড়ার কারণ দু’টি। প্রথমত, সীমান্তে কড়াকড়ি বাড়ায় আগের মতো অনুপ্রবেশ এখন সহজ নয়। উপযুক্ত জঙ্গির অভাবেই তাই বাধ্য হয়ে আত্মঘাতী হামলার জন্য স্থানীয়দের উপরে ভরসা করতে হচ্ছে চাঁইদের। দ্বিতীয়ত, উপত্যকার যুবকদের আত্মঘাতী হামলায় জীবনদানের কাহিনি প্রচার করে স্থানীয়দের উদ্বুদ্ধ করতেও চেষ্টা করবে আইএসআই।

Jammu and Kashmir Pulwama Attack Militants JeM Militants India Pakistan POK Central Government BJP Opponents
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy