E-Paper

ভোট-যাত্রায় বিরোধী জোট, যাচ্ছেন রাহুলও

খসড়া ভোটার তালিকার উপরে আপত্তি ও আবেদনের পর্ব শেষ হলে সেপ্টেম্বরে বিহারের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। তার পরে অক্টোবরের শেষে বা নভেম্বরে হওয়ার কথা বিধানসভা ভোট।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৫ ০৭:২১
রাহুল গান্ধী।

রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) ঘিরে বিতর্কের মধ্যেই বিহারে আসন্ন বিধানসভা ভোটের জন্য ঘর গুছোতে শুরু করল বিরোধী শিবির। তালিকা সংশোধন করে গরিব মানুষের ভোট কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা এবং নীতীশ কুমারের সরকারের বিরুদ্ধে ৭১ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারির জোড়া অভিযোগ সামনে রেখে আপাতত রাস্তায় নামছে তারা। এরই পাশাপাশি শুরু হয়েছে বিরোধী জোটের (মহাগটবন্ধন) মধ্যে আসন রফার আলোচনাও।

খসড়া ভোটার তালিকার উপরে আপত্তি ও আবেদনের পর্ব শেষ হলে সেপ্টেম্বরে বিহারের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। তার পরে অক্টোবরের শেষে বা নভেম্বরে হওয়ার কথা বিধানসভা ভোট। শুধু ভোটার তালিকা নিয়ে বিতর্কে আটকে থাকলে যে ভোটের প্রস্তুতি ধাক্কা খেতে পারে, তা বুঝেই সক্রিয় হয়েছে বিরোধী শিবির। বিহারে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের শরিক দলগুলির আলোচনায় ঠিক হয়েছে, খসড়া তালিকা নিয়ে আবেদন-পর্ব চলাকালীনই অগস্ট মাসে রাখিবন্ধনের পরেই ‘ভোটবন্দি’র অভিযোগ সামনে রেখে সব জেলায় প্রতিবাদ-যাত্রা হবে। সেই যাত্রায় এসআইআর নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি বিহারে জেডিইউ-বিজেপি সরকারের কেলেঙ্কারির অভিযোগকে প্রচারে আনা হবে। নীতীশের সরকার বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় ৭১ হাজার কোটি টাকার খরচের শংসাপত্র (ইউসি) জমা দিতে পারেনি বলে সম্প্রতি রিপোর্ট দিয়েছে সিএজি। বিরোধীরা তাকেই হাতিয়ার করছে। বিরোধী দলনেতা, আরজেডি-র তেজস্বী যাদবের মতে, ‘অগস্ট ক্রান্তি’র মাসে তাঁরা বিহার জুড়ে গরিব মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া এবং রাজ্যের বেহাল দশার কথা বলে মানুষের কাছে যাবেন। রাজ্যের মোট ৯টি প্রশাসনিক বিভাগের (ডিভিশন) প্রতি সদরে একটি করে সভার পরিকল্পনা হয়েছে।

তেজস্বীর পাশাপাশি এই প্রতিবাদ-যাত্রায় অংশগ্রহণ করতে যেতে পারেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীও। বিহার প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি রাজেশ রামের বক্তব্য, ‘‘রাহুলজি’র কর্মসূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে রাজ্যে ১৭ দিনের এই প্রতিবাদ কর্মসূচির সূচনাতেই তিনি আসতে পারেন।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ জায়সওয়াল অবশ্য কটাক্ষ করছেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ আর রাহুল জুড়ি বেঁধে ফেল করেছিলেন! সেখানকার মতো এখানেও রাহুল-তেজস্বীর একই অবস্থা হবে। নীতীশের সরকার উন্নয়নের যে কাজ এবং আগামী পরিকল্পনা করেছে, বিরোধীরা তাকে হারাতে পারবে না।’’

রাজ্যে ২০ বছর সরকার চালানো নীতীশের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হাওয়ায় পাল্টা পাল তুলতে চাইছে বিরোধীরা। জোটের কর্মসূচি ছাড়াও কংগ্রেস যেমন ‘বিহার মে বাহার, না নোকরি, না রোজগার’ স্লোগান দিয়ে ময়দানে নেমেছে। আইনশৃঙ্খলা, বেকারত্বের মতো সাধারণের জীবনের সমস্যা নিয়ে রাস্তায় আন্দোলনের জন্য তারা এগিয়ে দিচ্ছে ছাত্র, যুব-সহ শাখা সংগঠনকে। প্রদেশ কংগ্রেস ভোটের সাংগঠনিক প্রস্তুতিতে নজর দিয়েছে। কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা শাকিল আহমেদ খানের সরকারি আবাসনে চলছে ‘ওয়ার রুম’। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা ব্রিজেশ পান্ডের কথায়, ‘‘নির্বাচন কমিশনের আড়ালে থেকে বিজেপি বিভিন্ন সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতে চাইছে। রাজ্যে কাজ নেই, রোজগার নেই, আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। এই সব প্রশ্ন তুলেই আমরা বিহারে বদল চাইছি।’’

আর এরই মধ্যে বিরোধী জোটে আসন-রফা নিয়ে কথাও চলছে। বিহারে গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে আরজেডি এবং কংগ্রেসের ‘নমনীয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বাকিরা। সূত্রের খবর, এ বার তাই আগে থেকেই আসন বণ্টনের আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন ৪০-৪৫, সিপিআই ২৪টি আসনে লড়তে চেয়েছে। আবার ‘বিকাশশীল ইনসান পার্টি’র (ভিআইপি) নেতা মুকেশ সাহনী মহাজোটের শরিক হতে চেয়ে বহু আসন দাবি করছেন! আরজেডি-কংগ্রেস নেতৃত্ব চেষ্টা চালাচ্ছেন বোঝাপড়ায় আসার।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rahul Gandhi Congress Bihar Assembly Election 2025 Special Intensive Revision

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy