হিমালয় অঞ্চলে ৪০০টিরও বেশি হিমবাহসৃষ্ট হ্রদের আকার বিপজ্জনক ভাবে বেড়েছে। ফলে দেশে দুর্যোগও আশঙ্কাও বাড়ছে। সম্প্রতি একটি রিপোর্টে এমনই জানাল কেন্দ্রীয় জল কমিশন। একইসঙ্গে কমিশন জানিয়েছে, এই হ্রদগুলির উপর ক্রমাগত নজরদারির প্রয়োজন।
গত জুনে গ্লেসিয়াল লেকস অ্যান্ড ওয়াটার বডিস-এর মাসিক রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় জল কমিশন জানিয়েছে, লাদাখ, জম্মু-কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশে এই হ্রদগুলি ছড়িয়ে রয়েছে। গ্লেসিয়াল লেক অ্যাটলাস ২০২৩-এর তথ্য বলছে, ৬৮১টি হিমবাহসৃষ্ট হ্রদের মধ্যে ৪৩২টি রয়েছে ভারতে। সেই হ্রদগুলির আকার বেড়েছে। ফলে হিমালয় অঞ্চলের রাজ্যগুলিতে বিপদের ঝুঁকি বাড়ছে।
কেন্দ্রীয় জল কমিশনের রিপোর্ট বলছে, দেশে হিমবাহসৃষ্ট হ্রদগুলির মোট এলাকা ২০১১ সাল থেকে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে ৩০ শতাংশ বেড়েছে। ১৯১৭ হেক্টর থেকে তা বেড়ে হয়েছে ২৫০৮ হেক্টর। ওই রিপোর্ট বলছে, অরুণাচল প্রদেশে এ রকম হ্রদ রয়েছে ১৯৭টি। লাদাখে ১২০, জম্মু-কাশ্মীরে ৫৭, সিকিমে ৪৭, হিমাচল প্রদেশে ৬ এবং উত্তরাখণ্ডে ৫টি। সর্বোপরি, এ বছরের জুনের মধ্যে হিমালয় অঞ্চলের ১৪৩৫টি হিমবাহসৃষ্ট হ্রদের আকার বেড়েছে।
আরও পড়ুন:
যে ভাবে হ্রদের আকার বাড়ছে, তাতে বিপদের সম্ভাবনাও প্রবল ভাবে বাড়ছে। তাই কেন্দ্রীয় জল কমিশন প্রস্তাব দিয়েছে যে, এই হ্রদগুলির উপর নজরদারি চালানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে। বিপদ ঘনিয়ে আসছে এমন আঁচ করতে পারলেই যেন আগাম সতর্ক করা হয়, এ রকম ব্যবস্থাও গড়ে তোলা দরকার। যাতে নিচু এলাকার বাসিন্দাদের দুর্যোগ থেকে রক্ষা করা যায়।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে হিমালয় অঞ্চলের রাজ্যগুলিতে দুর্যোগের ছবি আমূল বদলে গিয়েছে। ঘন ঘন মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়পা বান, ধসের জেরে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ, সিকিম, উত্তরাখণ্ডের মতো রাজ্যগুলি। সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর ধরালীতে যে ভয়ানক বিপর্যয় নেমে এসেছিল, যে হড়পা বান পাহাড়ে ঢাল বেয়ে নেমে আসে, সেটি মেঘভাঙা বৃষ্টির কারণে হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু আবার এই তথ্যও উঠে এসেছে যে, হিমবাহসৃষ্ট হ্রদ ফেটে এই হড়পা বানের সৃষ্টি হয়েছে। যেমনটা হয়েছিল ২০১৩ সালে কেদারনাথে।