Advertisement
E-Paper

পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটিতে বেনজির তৎপরতা, কাশ্মীরে ঢোকার অপেক্ষায় ২৫০ সন্ত্রাসবাদী

যে ২৭ জঙ্গি ঘাঁটিতে চলছে নাশকতার তৎপরতা, তার মধ্যে আছে লিপা উপত্যকার ঘাঁটিও। ২০১৬-র সেপ্টেম্বরে উরি সেক্টরে পাক হামলার পর এই লিপা উপত্যকার ঘাঁটিই সার্জিকাল স্ট্রাইকে ধ্বংস করে দিয়েছিল ভারতীয় সেনা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৯:৩৩
নিয়ন্ত্রণরেখায় নাশকতার নয়া ছক পাক জঙ্গিদের। ছবি: রয়টার্স।

নিয়ন্ত্রণরেখায় নাশকতার নয়া ছক পাক জঙ্গিদের। ছবি: রয়টার্স।

ভারতের সঙ্গে যখন সন্ত্রাস দমন নিয়ে আলোচনায় উৎসাহ দেখাচ্ছেন সদ্যনির্বাচিত পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, ঠিক তখনই নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ২৭ জঙ্গি ঘাঁটি থেকে দক্ষিণ কাশ্মীরে ঢোকার ষড়যন্ত্র করছে প্রায় আড়াইশো প্রশিক্ষিত জঙ্গি। ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে পৌঁছেছে এই চাঞ্চল্যকর খবর।

যে ২৭ জঙ্গি ঘাঁটিতে চলছে নাশকতার তৎপরতা, তার মধ্যে আছে লিপা উপত্যকার ঘাঁটিও। ২০১৬-র সেপ্টেম্বরে উরি সেক্টরে পাক হামলার পর এই লিপা উপত্যকার ঘাঁটিই সার্জিকাল স্ট্রাইকে ধ্বংস করে দিয়েছিল ভারতীয় সেনা। সেই ধ্বংস হয়ে যাওয়া জঙ্গি শিবিরটিকেই ফের বাঁচিয়ে তুলেছে পাক জঙ্গিরা, এমনটাই জানা গিয়েছে ভারতীয় সেনা সূত্রে।

২০১৬ সালে ভারতীয় সেনার এনকাউন্টারে হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান গনির মৃত্যুর পর থেকেই দক্ষিণ কাশ্মীরে জঙ্গিদের অতিরিক্ত সক্রিয়তা লক্ষ্য করছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। ২০১৬-র সেপ্টেম্বরে একাধিক জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরও কমেনি তৎপরতা। উল্টে শেষ এক বছরে বেড়েছে জঙ্গি অনুপ্রবেশ, নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা এবং পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের হুমকির ঘটনা। যা চরমে উঠেছে কাশ্মীরে একের পর এক পুলিশকর্মীকে হত্যার ঘটনায়। যদিও এতেই শেষ নয়, সীমান্তের ওপারে চলছে আরও ব্যাপক হিংসার ষড়যন্ত্র।

পুরনো তথ্য মিলিয়ে ভারতীয় সেনা গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন,বুরহান গনির মৃত্যুর আগে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ১৪ জঙ্গি ঘাঁটিতে ছিল প্রায় ১৬০ প্রশিক্ষিত জঙ্গি। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে সেই সংখ্যা তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বেড়ে দাঁড়ায় ২৩০। অন্য দিকে,জঙ্গি ঘাঁটির সংখ্যাও ১৪ থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ১৯। ইমরান প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তৈরি হয়েছে আরও আটটি নতুন জঙ্গি শিবির। এই মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে জঙ্গি ঘাঁটির মোট সংখ্যা ২৭। এমনটাই জানতে পেরেছেন ভারতীয় সেনা গোয়েন্দারা।

আরও পড়ুন: নমাজের জন্য মসজিদ অত্যাবশ্যক নয়, সুপ্রিম কোর্টে বহাল আগের রায়

২৭ টি জঙ্গি ঘাঁটির মধ্যে লস্কর-ই-তইবার নিয়ন্ত্রণে আছে লিপা, চাকোথি, বারারকোট, সার্দি এবং জুরা এলাকার জঙ্গি ঘাঁটিগুলি। অন্য দিকে হিজবুল জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে আছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ফরওয়ার্ড কাহুতা অঞ্চলের শিবিরগুলি।

যদিও সেনা গোয়েন্দারা অবাক হচ্ছেন লিপার জঙ্গি ঘাঁটি ফের বাঁচিয়ে তোলার ঘটনায়। ভারতীয় সেনা যে কোনও মুহূর্তে এই জঙ্গি শিবির ধ্বংস করে দিতে পারে, তা জানা সত্ত্বেও পাক সেনা ও সন্ত্রাসবাদীদের বেপরোয়া মনোভাব চিন্তায় ফেলছে গোয়েন্দাদের। যদিও ২০১৬-র সেপ্টেম্বরে ভারতীয় সেনার অতর্কিত সার্জিকাল স্ট্রাইকে ধ্বংস হয়ে যাওয়া অন্য একটি জঙ্গি শিবির বিমভার গলিতে এখনও কোনও তৎপরতা লক্ষ্য করেননি ভারতীয় গোয়েন্দারা।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জঙ্গিদের ভারতে ঢোকার প্রস্তুতি এক দম শেষ পর্বে। বরফ পড়লেই শুরু হবে অপারেশন। লিপা, চানানিয়ান, মন্দোকলি, নওকোটে এখন সেই অপেক্ষাতেই ৩০ জন লস্কর জঙ্গি। উরি আর কুপওয়ারাই টার্গেট এই জঙ্গিদের।

আরও পড়ুন: হাত ফস্কে নিজেকেই গুলি বায়ুসেনা উপ-প্রধানের

সামনেই কাশ্মীরের পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ভেস্তে দেওয়া জঙ্গিদের প্রাথমিক লক্ষ্য। এ ছাড়া ভারত-পাক শান্তি প্রক্রিয়া ভেস্তে দেওয়াও আছে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের অ্যাজেন্ডায়। সদ্য নির্বাচিত পাক প্রধানমন্ত্রী মুখে সন্ত্রাসবিরোধী কথা বললেও পাক সেনা ও পাক গোয়েন্দাদের প্রভাব থেকে কতটা বেরিয়ে আসতে পারেন সেদিকেই নজর রাখছে ভারত। কারণ তাহলেই সীমান্তের ওপারে কমবে জঙ্গি তৎপরতা। যদিও ইমরান কী করবেন, সেই ভরসায় বসে নেই ভারত। জঙ্গি অনুপ্রবেশ রুখতে পাল্টা ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই নিয়েছে ভারতীয় সেনা। যদিও তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। আসল সময়েই তা টের পাওয়া যাবে বলে জানা গিয়েছে ভারতীয় সেনা গোয়েন্দা সূত্রে।

গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ

(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

India Pakistan POK lOC Indian Army Terrorism
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy