ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে এঁটে উঠতে পারবে না পাকিস্তান। বরং ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামলে আখেরে পাকিস্তানেরই ক্ষতি বেশি হবে। এমনটাই মনে করেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ)-র প্রাক্তন কর্তা জন কিরিয়াকু। ২০০১ সালে ভারতের সংসদে হামলার পরই দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধ অবধারিত হয়ে উঠেছিল বলেও এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন সিআইএ কর্তা। সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে ইসলামাবাদের যে একটা টানাপড়েন তৈরি হয়েছিল, সে কথাও স্বীকার করেছেন কিরিয়াকু।
সিআইএ কর্তার মতে, পাকিস্তানের বোঝা উচিত যে, ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তাদের খুব একটা লাভ হবে না। তাঁর কথায়, ‘‘ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যদি যুদ্ধ বাধে, তা হলে পাকিস্তানের জন্য ফল খুব একটা ভাল হবে না। কারণ ওরা যুদ্ধে হারবে।’’ তবে পরমাণু যুদ্ধ নয়, এ ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে প্রথাগত যুদ্ধের কথাই বলতে চেয়েছেন বলে দাবি সিআইএ-র প্রাক্তন কর্তার। ভারতকে যে ভাবে বার বার ওস্কাচ্ছে পাকিস্তান, তা-ও তাদের জন্য খুব একটা ভাল হবে না বলেও মত সিআইএ-র প্রাক্তন কর্তার।
আরও পড়ুন:
এ প্রসঙ্গে ভারতে পর পর কয়েকটি বড় জঙ্গিহামলার ঘটনা তুলে ধরেছেন মার্কিন গোয়েন্দাকর্তা। তবে বার বার হামলা করা হলেও ভারত যে সংযত আচরণ করেছে, সে কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। বছরের পর পর ধরে ভারতের মাটিতে সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মার্কিন গোয়েন্দাকর্তা ২০১৬ সালের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, ২০১৯ সালের বালাকোট স্ট্রাইক, সম্প্রতি পহেলগাঁও হামলার পর অপারেশন সিঁদুরের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।
২০০১ সালে নয়াদিল্লিতে সংসদভবনে হামলার ঘটনাকে ঘিরে যে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যে যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল সে কথাও নিজের বক্তব্যে তুলে ধরেছেন মার্কিন গোয়েন্দাকর্তা। তবে সেই সময় আল-কায়দা, আফগানিস্তান নিয়েই বেশি ব্যস্ত ছিল আমেরিকা। ফলে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছিল, সে বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চায়নি বলেও দাবি মার্কিন গোয়েন্দাকর্তার। দু’দেশের মধ্যে যখন যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, সেই সময় তিনি জানতে পেরেছিলেন, পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রভান্ডারের চাবিকাঠি পেন্টাগনের হাতে তুলে দিয়েছেন তৎকালীন পাক প্রেসিডেন্ট তথা সেনাশাসক জেনারেল পারভেজ মুশারফ।
প্রসঙ্গত, সিআইএ-র গুপ্ত তথ্য ফাঁস করার অভিযোগে ২০১২ সালে কিরিয়াকুকে গ্রেফতার করেছিল মার্কিন সরকার। বিচারে ৩০ মাসের জেল হয় তাঁর। কিন্তু তার পরেও তিনি থেমে থাকেননি। আমেরিকা এবং তার গোয়েন্দা সংস্থা সম্পর্কে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন।