পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশে স্কুলবাসে হামলা এবং ছ’জনের মৃত্যুর নেপথ্যে ভারতের হাত রয়েছে বলে দাবি করলেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ। একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, এই হামলার নেপথ্যে ভারতের ভূমিকা প্রমাণ করে দিতে পারবে ইসলামাবাদ। এমনকি, বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এবং সন্ত্রাসবাদী সংগঠন তেহরিক-ই তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সঙ্গেও ভারতের যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি করেছেন আসিফ।
বুধবার বালোচিস্তানের খুজ়দার জেলার জ়িরো পয়েন্টের কাছে কোয়েটা-করাচি হাইওয়ের উপর স্কুলবাসে বোমা বিস্ফোরণ হয়। পাক সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত তিন শিশু-সহ ছ’জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে প্রশাসন। আরও অন্তত ৪০ জন গুরুতর জখম। তাদের অধিকাংশই স্কুলপড়ুয়া। খুজ়দার ক্যান্টনমেন্টের আর্মি পাবলিক স্কুলে পড়ুয়াদের নিয়ে যাচ্ছিল বাসটি। তাতে আত্মঘাতী হামলা হয় বলে অনুমান পুলিশের। আহতদের মধ্যে ১৫ জন ছাত্রীও রয়েছে। কোয়েটায় তাদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ এবং পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির।
আরও পড়ুন:
জিয়ো নিউজ়ের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘বালোচিস্তানের ঘটনায় ভারতের যোগ আমরা প্রমাণ করে ছাড়ব। যা দাবি করছি, তা নিশ্চিত করব। বিএলএ ভারতের ছায়া সংগঠন হিসাবেই কাজ করছে।’’ উল্লেখ্য, বুধবারই ঘটনার দায় ভারতের ঘাড়ে ঠেলার চেষ্টা করেছিল পাকিস্তান। অভিযোগ নস্যাৎ করে কড়া বিবৃতি দিয়েছে নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, গোটা বিশ্বের সন্ত্রাসবাদের উৎসস্থল হল পাকিস্তান। নিজেদের সেই ভাবমূর্তি থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এবং নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে ভারতকে দোষারোপ করা পাকিস্তানের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু তাদের এই চাল ব্যর্থ হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করে ভারত। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ পাকিস্তানে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করা হয় একাধিক জঙ্গিঘাঁটি। পাকিস্তান প্রথম থেকেই এই ঘটনার সঙ্গে যোগ অস্বীকার করেছে। তারা পহেলগাঁও কাণ্ডের নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত এবং পাকিস্তান সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল। টানা চার দিন সংঘর্ষের পর গত ১০ মে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। তবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখনও তলানিতে।