Advertisement
E-Paper

‘রুটিন’ অভিযান ঘিরে আতঙ্ক বাড়ছে কাশ্মীরে

সরকারের দাবি, নেহাতই ‘রুটিন’ বিষয়। কিন্তু পুলওয়ামা কাণ্ডের পরে তা থেকেই বারবার আতঙ্ক ছড়াচ্ছে কাশ্মীরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩২

সরকারের দাবি, নেহাতই ‘রুটিন’ বিষয়। কিন্তু পুলওয়ামা কাণ্ডের পরে তা থেকেই বারবার আতঙ্ক ছড়াচ্ছে কাশ্মীরে। দীর্ঘস্থায়ী অশান্তি থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষ, অনেক সম্ভাবনাই ঘুরছে উপত্যকার বাসিন্দাদের মাথায়।

গত রাতে অভিযান চালিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা-সহ অন্তত ২০০ জনকে গ্রেফতার করেছে বাহিনী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট নেতা ইয়াসিন মালিক ও জামাত-ই-ইসলামি নেতা আব্দুল হামিদ ফয়েজ। পাশাপাশি কাশ্মীরে আরও ১০০ কোম্পানি আধাসেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ওই বাহিনীকে আকাশপথে শ্রীনগরে নিয়ে যাওয়া হবে। এর মধ্যে থাকছে ৩৫ কোম্পানি বিএসএফ। আসছে আইটিবিপি-ও। ২০১৬ সালে কাশ্মীরে বিএসএফ পাঠানো হলেও এক সপ্তাহ পরই তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হয়। ১৪ বছর পরে কাশ্মীরে মোতায়েন হতে চলেছে বিএসএফ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র বলছে, ভোটের আগে এটাও ‘রুটিন’ বিষয়।

জামাতের দাবি, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৫এ অনুচ্ছেদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই শুনানি রয়েছে। তার আগেই যে ভাবে অভিযান চালানো হচ্ছে তাতে বোঝা যায়, সরকারের কোনও ‘গোপন অভিসন্ধি’ আছে। দিল্লির বিজেপি সূত্রেও খবর, সম্প্রতি ৩৫এ অনুচ্ছেদ নিয়ে বিজেপি-আরএসএস শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠক হয়েছে। তাতে স্থির হয়েছে, ৩৫এ অনুচ্ছেদ নিয়ে কিছুটা কড়া অবস্থান নেওয়া হবে। কারণ, তা না হলে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার বিরুদ্ধে বিজেপির লড়াই কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে। আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেন খোদ প্রধানমন্ত্রী।

পুলিশের অবশ্য দাবি, গ্রেফতারি নেহাতই ‘রুটিন’ পদক্ষেপ। আগেও বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ও পাথর ছোড়ায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে স্বরাষ্ট্র কর্তারা স্বীকার করছেন, জামাত-ই-ইসলামির বিরুদ্ধে এই প্রথম বড় অভিযান চালানো হয়েছে। ওই সংগঠন থেকেই হিজবুল মুজাহিদিনের জন্ম বলে দাবি সরকারের। তবে তাঁদের দাবি, অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনও ভোটের আগে ‘রুটিন মহড়া’।

আরও পড়ুন: আলিঙ্গনেও সাড়া দেয় না মোদীর শরীর! কটাক্ষ রাহুলের

রাতের গ্রেফতারির খবর পাওয়া মাত্রই আজ পেট্রোল পাম্প, ওষুধের দোকান ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকানে ভিড় জমান কাশ্মীরিরা। শ্রীনগরের সনানতনগরের বাসিন্দা মুদাসির মহম্মদ বললেন, ‘‘মনে হচ্ছে লড়াই শুরু হতে পারে। তাই জ্বালানি, ওষুধ, খাবার মজুত রাখা ভাল।’’ লাল চকের এক পেট্রোল পাম্প মালিক জানালেন, সকাল থেকে কয়েকশো গাড়িতে পেট্রোল ভরেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কী হবে সেটাই কেউ বুঝতে পারছে না।’’ শ্রীনগরের মেডিক্যাল কলেজে বাতিল হয়েছে সব কর্মীর শীতকালীন ছুটি। আগামিকালের মধ্যে হাসপাতালের জন্য প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল সামগ্রী সংগ্রহ করতে সব জেলাকে নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।

গত কাল রাত দেড়টা পর্যন্ত বায়ুসেনার বিমানের ওড়ার শব্দে আতঙ্ক আরও বাড়ে। বায়ুসেনা অবশ্য জানিয়েছে, ‘রুটিন’ মহড়া হয়েছে।

আবার রাজৌরি, কেরন ও কারনার মতো এলাকায় নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চলের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলেছে সেনা। রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের মতে, পুলওয়ামা হামলার পর থেকে পাকিস্তানি গোলাবর্ষণ বেড়ে গিয়েছে। তাই বাসিন্দাদের অল্প সতর্ক হয়েছে। আগেও এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে।

সবই ‘রুটিন’ বিষয়। কিন্তু আতঙ্কটা থেকেই যাচ্ছে।

Kashmir BSF Paramilitary Force MHA Ministry of Home Affairs
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy