Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Mayawati

বিরোধীদের হইহট্টগোলে স্থগিত বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন

দলিত ইস্যুতে রাজ্যসভায় রীতিমতো হুলুস্থুল বাধিয়ে দিলেন বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী। অভিযোগ জানালেন, উত্তরপ্রদেশের দলিতরা নির্যাতনের শিকার। বিষয়টি নিয়ে সংসদে বলতে চান তিনি। দলিত ইস্যুতে তাকে বলতে বাধা দেওয়া হলে রাজ্যসভা থেকে পদত্যাগ করার হুমকিও দেন মায়াবতী।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৭ ১৪:৩০
Share: Save:

সংসদ শুরুর আগেই সর্বদল বৈঠকে কংগ্রেস থেকে বাম— সকলেই স্পষ্ট করে দিয়েছিল, দেশ জুড়ে গোরক্ষকদের তাণ্ডব, কাশ্মীরে অশান্তি, চিনের সঙ্গে বিরোধের মতো ইস্যুগুলি নিয়ে বাদল অধিবেশনে ঝড় তুলবে তারা। পরিস্থিতি বুঝে সর্বদল বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী সেই হাওয়া কিছুটা ঘোরানোর চেষ্টাও করে করেছিলেন।

কিন্তু, আখেরে লাভ যে তেমন কিছুই হয়নি, মঙ্গলবার বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনেই তা স্পষ্ট হয়ে গেল। স্বঘোষিত গোরক্ষা বাহিনীর তাণ্ডব থেকে দলিতদের উপর আক্রমণ— একাধিক ইস্যুতে এ দিন সংসদের উভয় কক্ষে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয় বিরোধীরা। বিরোধী-বিক্ষোভে দফায় দফায় মুলতুবি করে দেওয়া হয় সংসদের অধিবেশন। এরই মধ্যে বিরোধীদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতা, দলিত ইস্যুতে কথা বলতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রাজ্যসভা থেকে পদত্যাগের হুমকি দিলেন বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতী।

গত কাল রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কাকে ভোট দিয়েছেন সে বিষয়ে রহস্য বাড়িয়ে ছিলেন মায়াবতী। চূড়ান্ত অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা তিনি বলেছিলেন, ‘‘যে-ই জিতুন, আখেরে দলিত প্রার্থীই রাষ্ট্রপতি হবেন।’’ আর এ দিন দলিত ইস্যুতে রাজ্যসভায় রীতিমতো হুলুস্থুল বাধিয়ে দিলেন বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী। অভিযোগ জানালেন, উত্তরপ্রদেশের দলিতরা নির্যাতনের শিকার। বিষয়টি নিয়ে সংসদে বলতে চান তিনি। দলিত ইস্যুতে তাকে বলতে বাধা দেওয়া হলে রাজ্যসভা থেকে পদত্যাগ করার হুমকিও দেন মায়াবতী।

আরও পড়ুন: উপরাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন বেঙ্কাইয়া

এর পরেই মায়াবতীর বিরুদ্ধে সরব হয় বিজেপি। মায়াবতী রাজ্যসভার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছেন বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নকভি। বিজেপি সাংসদের এই মন্তব্যের পরই তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যসভা। হইহট্টগোলের জোরে মুলতুবি করে দেওয়া হয় সংসদের উচ্চ কক্ষের অধিবেশন। সিপিএম-এর সীতারাম ইয়েচুরি জানান, মায়াবতী একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ই তুলেছিলেন। বিজেপি-র আমলে উত্তরপ্রদেশে দলিতদের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় বলেও মন্তব্য করেন এই সিপিএম নেতা। বিরোধী বিক্ষোভের একই ছবি ধরা পড়েছে লোকসভাতেও।

বিরোধীদের থেকে আক্রমণ ধেয়ে আসবে বলে গণপিটুনি থেকে দুর্নীতি— গত কালই সব বিষয় ছুঁয়ে গিয়েছেন মোদী। বাদল অধিবেশনের শুরুতে কৃষকদের ‘প্রণাম’ করে সংসদে পা দিয়েছিলেন। আর বার বার স্মরণ করিয়েছিলেন জিএসটির কথা। বলেছিলেন জিএসটি নিয়ে তাঁর নতুন পরিভাষা, ‘গ্রোয়িং স্ট্রংগার টুগেদার’—এর কথাও। পরে বাদল অধিবেশনের প্রথম দিন বেশ ফুরফুরে সংসদ ঘুরতে দেখা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী থেকে মুলায়ম সিংহ যাদব, দেবগৌড়া এমনকী, সাংসদ ফারুক আবদুল্লা, মুসলিম লিগের কুনহালি কুট্টির সঙ্গেও কুশল বিনিময়ও করেন তিনি। মুখে বারবার সহমতের কথা বলে বিরোধীদের বশে আনতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

কিন্তু, দ্বিতীয় দিনই বিক্ষোভে কার্যত মাঠে মারা গেল মোদীর যাবতীয় প্রচেষ্টা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE