বকেয়া ৬৭টি বিলের মধ্যে লোকসভায় আটকে আছে মাত্র ৮টি। বাদবাকি ৫৯টি বিল ঝুলে রয়েছে রাজ্যসভায়। অথচ সেখানেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই সরকারের। ফলে রাজ্যসভার বিভিন্ন বিল পাশ আটকে যাওয়ার আশঙ্কা নিয়েই আজ সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের দিন স্থির করতে হল নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে।
মন্ত্রিসভার সংসদীয় কমিটি স্থির করেছে, ২৪ নভেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় এক মাস ধরে চলবে সংসদের অধিবেশন। এক মন্ত্রীর কথায়, “এ বারে অন্তত ৩০-৩৫টি বিল পাশ করানোর চেষ্টা করবে সরকার।” বিশেষ করে সংস্কারমুখী বিলগুলি যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব পাশ করানোর দায় রয়েছে সরকারের। অথচ বিরোধীদের সহযোগিতা না পেলে সেটা সম্ভব নয়। সংসদীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু তাই এ ব্যাপারে বিরোধী দলগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করবেন।
কারণ সরকারের কাছে এটা স্পষ্ট যে, বিরোধীদের সাহায্য ছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তি, বিমা বিল, জমি বিল, পণ্য ও পরিষেবা করের মতো বিলগুলি পাশ করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্ট কয়লা খনিগুলির বণ্টন বাতিল করার পর যে অর্ডিন্যান্স করতে হয়েছে, সেটিও পাশ করাতে হবে সরকারকে। তবে সেটি নিয়ে বিরোধীরা এখনও আপত্তি তোলেনি। সরকারকে বেশি ভাবাচ্ছে বাকি বিলগুলি। কারণ, মোদী-অমিত শাহ জুটি যে রকম ‘একলা চলো’ নীতি নিয়ে রাজ্যে-রাজ্যে আঞ্চলিক দলগুলিকে কোণঠাসা করার নীতি নিয়ে দল চালাচ্ছে তাতে রাজ্যসভায় ওই সব দলের সহযোগিতা কতটা পাওয়া যাবে সে ব্যাপারে ঘোর সন্দেহ থাকছে।
রাজ্যসভার এই পরিস্থিতি যে খুব শিগগিরই বদলে যাবে, এমনটাও নয়।
আজই নির্বাচন কমিশন উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের মোট ১১টি রাজ্যসভা আসনে নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছে। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব জানেন, তাতে রাজ্যসভার ছবিটা বিশেষ পাল্টাবে না। সংসদের আসন্ন অধিবেশন যখন চলবে, সেই সময়ই জম্মু-কাশ্মীর ও ঝাড়খণ্ডে নির্বাচন চলবে। মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় জয়ের পর বিজেপি এখন এই দুই রাজ্যেও সরকার গঠনের ঘুঁটি সাজাচ্ছে। এই দু’রাজ্যে সাফল্য পেলে রাজ্যসভাতেও শক্তি বাড়বে বিজেপির। এ ভাবে আগামী কয়েকটি বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের শক্তি অনেকটা বাড়িয়ে নিতে পারলে তবেই বছর দুই পরে রাজ্যসভায় গরিষ্ঠতা পেতে পারে বিজেপি। তত দিন বিরোধীদের সাহায্যের অপেক্ষাতেই থাকতে হবে মোদী সরকারকে।
কিন্তু একেবারেই সহযোগিতা তা না পেলে, বকেয়া বিলগুলির কী হবে এই দু’বছর? গত অধিবেশনের সময়ই বিজেপি যৌথ অধিবেশন ডেকে সেগুলি পাশ করানোর ভাবনাচিন্তা শুরু করে। এ বারও কি সে কথা ভাবা হচ্ছে? বেঙ্কাইয়া নায়ডু আজ বলেন, “সরকার এ ব্যাপারে আর একটু অপেক্ষা করতে চায়। যদি বিরোধীরা সহযোগিতা না করে, তা হলে এক বার সংসদের যৌথ অধিবেশন ডেকে একসঙ্গে অনেক বিল পাশ করানোর চেষ্টা করতে পারে সরকার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy