মাস কয়েক আগে হঠাৎই বাচ্চা-বুড়ো সকলের টাক পড়ে যাচ্ছিল রহস্যজনক ভাবে। এই ঘটনাকে ঘিরে আতঙ্ক ছড়ায় মহারাষ্ট্রের বুলঢাণা জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন আতঙ্কের শিকার ওই জেলারই কয়েকটি গ্রাম। এ বার নখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। এই ঘটনাকে ঘিরে হুলস্থুল পড়ে গিয়েছে ওই গ্রামগুলিতে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বুলঢাণা জেলার চারটি গ্রাম থেকে এই অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। ২৯ জন গ্রামবাসী ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক, সকলের নখে পচন ধরছে। শুধু তা-ই নয়, কারও কারও নখ টানতেই উঠে আসছে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই জেলা স্বাস্থ্য দফতর তদন্তে নেমেছে।
আরও পড়ুন:
জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিল বাঙ্কার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, চারটি গ্রামে মোট ২৯ জনের নখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে নিজে থেকে নখ খসে পড়ে গিয়েছে বলেও দাবি করা হচ্ছে। আক্রান্ত গ্রামবাসীদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শেগাঁওয়ের পঞ্চায়েত প্রধান রাম ঠারকার জানিয়েছেন, গত দু’দিন ধরে এই ধরনের ঘটনায় গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কারও নখ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, কারও নখ ভেঙে যাচ্ছে, কারও আবার নখ খসে পড়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর থেকে আক্রান্তদের রক্তের নমুনা নিয়ে গিয়েছে। তবে কী থেকে এই ঘটনা, তা স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তবে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, শরীরে অতিরিক্তি পরিমাণে সেলেনিয়াম নামক রাসায়নিকের উপস্থিতির কারণে এই ঘটনা। যে কারণে বুলঢাণা জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের চুল পড়ে টাক হয়ে যাচ্ছিল, এ ক্ষেত্রে সেই কারণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
মাটিতে অতিরিক্ত সেলেনিয়াম পাওয়া গিয়েছে বুলঢাণায়। সেই মাটিতে যে ফসল হচ্ছে, সেই ফসলের মাধ্যমে মানবশরীরে প্রবেশ করছে রাসায়নিক। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে বুলঢাণার ১৮টি গ্রামের ২৭৯ জনের চুল পড়ে টাক হয়ে গিয়েছিল। কারণ হিসাবে উঠে এসেছিল শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণ সেলিনিয়ামের উপস্থিতি। নখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার নেপথ্যেও কি একই কারণ? খতিয়ে দেখছে স্বাস্থ্য দফতর।