ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী আইএসএফ নামে রাজনৈতিক দল তৈরি করেছিলেন। তাঁর ভাই নওসাদ সিদ্দিকী বিধায়কও হয়েছেন। এ বার উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের মাওলানাবাগ শরিফের পীরজাদা খোবায়েব আমিন রাজনীতিতে এলেন। আজ দিল্লিতে তিনি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। তার পরেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, গত ১৫ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু, দলিত, জনজাতি, ওবিসি সমাজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকলেও তৃণমূলনেত্রী তাঁদের শুধু মাত্র ‘ভোটব্যাঙ্ক’ হিসেবে দেখেছেন। তাই তিনি সংখ্যালঘুদের ‘দুধেল গাই’ বলে সম্বোধন করেছেন। খোবায়েব বলেন, ‘‘আজ যখন রাজ্যে চাকরিহারা শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন, সেখানে সব সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরাই রয়েছেন।’’
আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে খোবায়েব আমিনের কংগ্রেসে যোগ দেওয়াকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই দাবি করছেন দলীয় নেতৃত্ব। গত এপ্রিল মাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে ওয়াকফ আইন নিয়ে মুসলিম সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে খোবায়েবও হাজির ছিলেন। কিন্তু আজ তিনি মোদী সরকারের ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে তৃণমূলের অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ও বিজেপি শুধু হিন্দু-মুসলিমের রাজনীতি করছে। রাজ্যের উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য নিয়ে কেউ কথা বলছেন না। শুধু ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে খোবায়েব কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না বলে জানিয়েছেন। তবে আগামী বিধানসভায় যাতে রাজ্যে কংগ্রেসের প্রতিনিধি থাকে, তার জন্য তিনি লড়াই করবেন।
এআইসিসি-তে পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা গুলাম আহমেদ মির বলেন, ‘‘বসিরহাটের পীর রুহুল আমিন স্বাধীনতা আন্দোলন, মুসলিম পুনর্জাগরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। সেই পরিবারের নতুন প্রজন্ম খোবায়েব আমিন কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ কংগ্রেস সংবিধানের জন্য লড়ছে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকার গত ১৫ বছরে কী কাজ করেছে, তার হিসাব দিচ্ছে না। আর বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় থেকে রাজ্যের জন্য কী করেছে, তা নিয়েও চুপ। কারণ কেন্দ্র কিছুই করেনি।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)