পরনে সাদা কুর্তা আর পাজামা। উত্তরীয় দিয়ে মাঝেমধ্যেই মুখ মুছছেন। সঙ্গীদের কথা শুনে কখনও মাটির দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়ছেন। কখনও তাকিয়ে আকাশের দিকে। শুক্রবার সকালে আমদাবাদে পৌঁছে বিমান দুর্ঘটনাস্থলে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গেলেন আমদাবাদের সরকারি সিভিল হাসপাতালে। কথা বললেন একমাত্র জীবিত বিমানযাত্রী বিশ্বাসকুমার রমেশের সঙ্গে। নির্দেশ দিলেন, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মৃতদের দ্রুত শনাক্ত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আজ আমদাবাদ বিমানবন্দরের পাশেই গুজরাত স্টেট এভিয়েশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার সংস্থার দফতরে পরিস্থিতির পর্যালোচনায় বৈঠক করেন। সরকারি সূত্রের খবর, বৈঠকে তিনি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন মৃত ও আহতদের পরিবারকে সব রকম সাহায্য দ্রুত পৌঁছে দিতে। তিনি মনে করিয়ে দেন, মৃতদের পরিবারের দীর্ঘস্থায়ী পুনর্বাসন গুরুত্বপূর্ণ। বৈঠকে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল, কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রী তথা গুজরাতের বিজেপি সভাপতি সি আর পাটিল, বিমানমন্ত্রী রামমোহন নায়ডু ছাড়াও কেন্দ্র ও গুজরাত সরকারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা হাজির ছিলেন। উদ্ধার, ত্রাণ ও শনাক্ত করার প্রক্রিয়া কী ভাবে চলছে, তা ব্যাখ্যা করা হয়। বিমানমন্ত্রী রামমোহন নায়ডু পরে বলেন, “কী কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তা প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। মৃত এবং আহতদের পরিবারকে সমস্ত রকমের সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। তদন্ত চলছে।”
বৃহস্পতিবার এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ভেঙে পড়ার পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আমদাবাদ যান। শুক্রবার সকালে যান প্রধানমন্ত্রী। সে জন্য নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয়েছিল আমদাবাদকে। একাধিক রাস্তা বন্ধ করে দেয় পুলিশ। বেলা ৯টা নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর কনভয় পৌঁছয় দুর্ঘটনাস্থলে। যে ডাক্তারি ছাত্রদের হস্টেলে বিমানটি ভেঙে পড়ে, তার ভিতরে যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন বিমানমন্ত্রী ও গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী। ডাক্তারি ছাত্রদের সঙ্গেও কথা বলেন মোদী। উদ্ধারকাজ সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার পরে কয়েক জন বিমান বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর আমদাবাদের সরকারি সিভিল হাসপাতালে গিয়ে চার তলার সি-সেভেন ওয়ার্ডের দিকে যান। সেখানেই ভর্তি রয়েছেন এই বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে ফেরা বিশ্বাসকুমার রমেশ। তাঁর সঙ্গে কিছু ক্ষণ কথা বলে তিনি যান সি-এইট ওয়ার্ডে, আহতদের খোঁজখবর নেন। এরপর যান জি-এইট ওয়ার্ডে, সেখানে ভর্তি দগ্ধ কয়েক জন।
ঘটনাস্থলে বা হাসপাতালে দাঁড়িয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও পরে নিজের এক্স হ্যান্ডলে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘ধ্বংসের দৃশ্য হৃদয় বিদারক। দুর্ঘটনার পরে যাঁরা অবিরাম কাজ করছেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেছি। বিমান দুর্ঘটনায় একমাত্র বেঁচে ফেরা যাত্রী ও আহতদের সঙ্গে দেখা করে আশ্বাস দিয়েছি, আমরা কঠিন সময়ে তাঁদের সঙ্গে রয়েছি। গোটা দেশ তাঁদের আরোগ্য কামনা করছে।’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)