E-Paper

‘লাটিয়ানের জামাত’, ফের কটাক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রী

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে একটি সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী ‘খান মার্কেট গ্যাং’-এর বিরুদ্ধে কটু কথা বলায় তৈরি হয়েছিল আলোড়ন। প্রশ্ন উঠেছিল, তাহলে কি লাটিয়ান’স দিল্লির অভিজাত শ্রেণিকেই নিশানা করতে চাইছেন ‘গরিবের সন্তান’ মোদী?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৫ ০৭:২৩
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

দিল্লি নির্বাচনে আপকে সরিয়ে গেরুয়া পতাকা উঠেছে। এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কণ্ঠে ফিরে এল সেই ‘খান মার্কেট গ্যাং’-এর প্রসঙ্গ। সেইসঙ্গে তিনি রাজধানীতে বিরোধী পক্ষ হিসেবে যোগ করলেন ‘লাটিয়ানের জামাত’-এর নামটাও। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, ভোট জেতার পর দিল্লির অভিজাততন্ত্রকেই উপহাস করতে চাইলেন মোদী, যারা সাধারণভাবে কংগ্রেস বা আপ-কেই সমর্থন করে এসেছে এতকাল।

একটি সংবাদমাধ্যমের আলোচনাচক্রে মোদী বলেছেন, “আমি অবাক হয়ে দেখছি বহু বছর ধরে খান মার্কেট গ্যাং এবং লাটিয়ানের জামাত একটি বিষয়ে নীরব। যে জনতা জনস্বার্থ মামলার ঠিকা নিয়ে রেখেছে, কথায় কথায় আদালতে দৌড়ান, তারা কেন কখনও স্বাধীনতা হরণ নিয়ে কোনও কথা বলেননি?” প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য, ব্রিটিশরা যে আইন দেড়শো বছর আগে ভারতের উপর চাপিয়ে দিয়েছিল এবং যা স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও বহাল ছিল, তা নিয়ে ‘খান মার্কেট গ্যাং’ নীরব ছিল। মোদীর কথায়, “ব্রিটিশদের আনা দেড়শো বছরের পুরনো আইন, ড্রামাটিক পারফর্ম্যান্স অ্যাক্ট-এর ফলে কোনও বিবাহ অনুষ্ঠানে ১০ জনের বেশি নাচলে পুলিশ বর-বৌয়ের সঙ্গে তাঁদেরও গ্রেফতার করতে পারত। আমাদের সরকার এই আইন বদলেছে।” প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, “মোদী যদি এই আইন আনত, শুধু ভেবে দেখুন কি কাণ্ডটাই না হত! এই ব্যক্তিরা আগুন জ্বালিয়ে দিতেন, মোদীর মাথার চুল ছিঁড়তেন! কিন্তু ঘটনা হল, এই ঔপনিবেশিক আইন আমার সরকার বাতিল
করেছে।” পাশাপাশি তিনি এ কথাও যোগ করেন, “ব্রিটিশ সরকারের এমন প্রায় দেড় হাজার আইনের কোনও প্রাসঙ্গিকতা আজ আর নেই। সেগুলি বাতিল করেছে সরকার। এমনকি, বাঁশ কাটার জন্যও জেল হওয়ার কথা ছিল। কারণ, আগের সরকারদের মাথায় ঢোকেনি বাঁশ কাটা মানে গাছ কাটা নয়। গাছ কাটার আইন বাঁশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। উত্তরপূর্বাঞ্চলের জনজাতিদের জীবনে বাঁশগাছ গুরুত্বপুর্ণ অংশ।”

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে একটি সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী ‘খান মার্কেট গ্যাং’-এর বিরুদ্ধে কটু কথা বলায় তৈরি হয়েছিল আলোড়ন। প্রশ্ন উঠেছিল, তাহলে কি লাটিয়ান’স দিল্লির অভিজাত শ্রেণিকেই নিশানা করতে চাইছেন ‘গরিবের সন্তান’ মোদী? দীর্ঘ দশ বছরের আপ শাসনকে পরাজিত করার পর মোদী আজ আবারও সেই প্রশ্ন তুললেন।

যদিও ‘খান মার্কেট গ্যাং’-এর কথা প্রথম রসিকতার ছলে বলেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। অভিজাত পরিবার থেকে আসা এক ঝাঁক অল্পবয়সি সাংসদ মধ্যাহ্নভোজের সময়ে চলে আসতেন এখানকার রেস্তরাঁগুলিতে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সুপ্রিয়া সুলে, মানবেন্দ্র সিংহ, জিতিন প্রসাদ, মিলিন্দ দেওরারা। পরে যোগ দিয়েছিলেন কানিমোঝি এবং কে কবিতাও। তবে খান মার্কেট বললেই যে পরিবারটির ছবি বারবার সামনে চলে আসে, তা সনিয়া-রাহুল–প্রিয়ঙ্কার। সনিয়ার পছন্দ এখানকার টাউন হলের স্যামন এবং টুনার সুশি, রাহুল-প্রিয়ঙ্কাও বারবার আসেন স্মোক হাউস-এ। মোদীর নিশানায় গান্ধী পরিবারের অভিজাততন্ত্র এবং মানবাধিকার আন্দোলনকারী (লাটিয়ানের জামাত) এ ভাবেই বারবার ফিরে আসছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

PM Narendra Modi new delhi indian politics

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy