প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তাস উন্নয়ন। আর শাসক শিবিরের শরিকদের মধ্যে রসায়ন ঠিক রাখার দিকে নজর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। বিজেপির এই জোড়া ফলাই আপাতত রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করতে বিহারে মনোযোগ বাড়াচ্ছেন।
রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ বিহারে তরঙ্গ তুলেছিল। মানুষের সেই সাড়াকে ভোটের বাক্সে টেনে নিয়ে যাওয়া এখন ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের সামনে পরীক্ষা। বিরোধীদের ‘মহাগঠবন্ধনে’র শরিক হতে আগ্রহী বিভিন্ন দলের আসনের দাবিও বাড়ছে। বিহার কংগ্রেসের নেতারা দিল্লিতে রাহুল, মল্লিকার্জুন খড়্গেদগের কাছে গিয়ে এই ব্যাপারে শলা-পরামর্শ করে এসেছেন। তারই উল্টো দিকে সক্রিয়তা বাড়াচ্ছে এনডিএ শিবির। বিহারের পুর্ণিয়ায় গিয়ে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন করার কথা প্রধানমন্ত্রী মোদীর। তার পরেই ১৮ তারিখ পটনায় যাওয়ার কথা শাহের। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে বৈঠক এবং এনডিএ-র শরিকদের সঙ্গে আসন-রফা নিয়ে আলোচনায় বসার কথা তাঁর। ওই সফর সেরে শাহ ফের বিহারে যেতে পারেন ২৭ তারিখ।
বিধানসভা নির্বাচনে আসন-রফা নিয়ে বিহারের বিজেপি নেতাদের সঙ্গে এই মাসের শুরুতেই দিল্লিতে নিজের বাড়িতে প্রাথমিক আলোচনা করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ফের মুখ্যমন্ত্রী পদে নীতীশের দাবি থাকার পাশাপাশি এ বার বাড়তি আসনেও লড়তে চাইছে তাঁর দল জেডিইউ। এনডিএ-র প্রধান দুই শরিক বিজেপি এবং জে়ডিইউ-এর মধ্যে প্রায় সমসংখ্যক আসনে রফা হতে পারে, এমন সূত্র প্রাথমিক ভাবে উঠে এসেছে। তবে চিরাগ পাসোয়ানদের দলের দাবি নিয়ে টানাপড়েন রয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে বিহারে গিয়ে ১৮ তারিখ এনডিএ-র শরিক দলগুলির নেতৃত্বের মুখোমুখি বসতে পারেন শাহ। বিধানসভা ভোটের সাংগঠনিক প্রস্তুতির জন্য বিহার রাজ্যকে পাঁচটি বিভাগে ( জ়োন) ভেঙে নিয়েছে বিজেপি। সেই বিভাগগুলির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গেও শাহের বৈঠক হতে পারে। পাশাপাশি, বিহারের বিভিন্ন মঠ ও মন্দিরের সাধু-সন্ন্যাসীদের নিয়ে শাহের আলাদা বৈঠকের বন্দোবস্ত হচ্ছে।
শাহের আগে বিহারে গিয়ে পূর্ণিয়ায় বিমানবন্দরের উদ্বোধন করার কথা প্রধানমন্ত্রীর। সে দিনই কলকাতা থেকে পূর্ণিয়া উড়ান পরিষেবাও চালু হয়ে যেতে পারে। ওই সফরে চারটি নতুন ট্রেনের যাত্রার সূচনাও হতে পারে প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে। ‘ডাবল ইঞ্জিনে’র বিহারে উন্নয়ন পরিকল্পনায় কেন্দ্র যে উদার, সেই বার্তা দিতে চান মোদী। আর আসন ভাগাভাগির প্রশ্নে বিজেপি এবং জেডিইউ-এর দুই রাজ্য সভাপতি দিলীপ জায়সওয়াল ও উমেশ সিংহ কুশওয়াহার দাবি, ‘‘এনডিএ-র মধ্যে এ বার আগের চেয়ে মসৃণ ঐক্য হবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)