বারাণসীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জাতীয় সড়ক উদ্বোধনের অনুষ্ঠান বাস্তবে হয়ে উঠল বিক্ষোভরত কৃষকদের ‘বার্তা’ দেওয়ার মঞ্চ। বিক্ষুদ্ধ কৃষকদের সঙ্গে বিরোধীদেরও কড়া সমালোচনা করলেন মোদী।
সোমবার নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে কৃষক বিক্ষোভের জন্য প্রথমে বিরোধীদের বিঁধলেন মোদী। পাশাপাশি আগের সরকারের সঙ্গে তুলনা টেনে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন, নয়া আইন কৃষকদের উন্নয়নের জন্য কতটা কার্যকর। একই সঙ্গে ‘পিএম কিসান সম্মান নিধি’র মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্প চালু না করা নিয়ে নাম না করে বিঁধেছেন পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিকেও।
লাগাতার ৫ দিন ধরে কৃষক বিক্ষোভের আঁচ পেয়েছ দেশ। পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড-সহ একাধিক রাজ্য থেকে বিক্ষোভকারীদের সেই স্রোত সোমবার পৌঁছেছে দিল্লির উপকণ্ঠে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনাও প্রত্যাখ্যান করেছেন বিক্ষুব্ধ কৃষকরা। বলেছেন, তাঁরা দিল্লি অবরুদ্ধ করবেন। এই আবহে তিন নয়া কৃষি আইনের পক্ষে সোমবার সুর আরও চড়ালেন প্রধানমন্ত্রী। বারাণসীতে ইউপিএ সরকারের সঙ্গে তুলনা টেনে বলেন, ‘‘আগে ঋণ মকুবের প্যাকেজ ঘোষণা হলেও তা ছোট কৃষকরা পেতেন না। সে সময় কৃষকদের প্রতারণা করা হত। কিন্তু এখন উত্তরপ্রদেশ থেকে তাজা সবজি লন্ডন যাচ্ছে। ছোট কৃষকরা আইনি সুবিধা পাচ্ছেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘নয়া আইনে নতুন বিকল্পের হদিশ দেওয়া আছে। কৃষি মান্ডি সরানোর কোনও কথা নতুন আইনে নেই। বরং সেগুলি আরও আধুনিক করা হবে।’’ কৃষকরা আরও বেশি দামে ফসল বিক্রির স্বাধীনতা পাবেন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
There's new trend now, earlier decisions of govt were opposed, now rumours have become basis for opposition. Propaganda is spread that although decision is right, it can lead to other consequences, about things that haven't happened or will never happen. Same is with farm laws:PM pic.twitter.com/C4yMcS70uW
— ANI (@ANI) November 30, 2020
#WATCH PM Modi addresses at an event in Varanasi https://t.co/oDh6xONC6W
— ANI (@ANI) November 30, 2020
আরও পড়ুন: খোশমেজাজে খোল বাজালেন শুভেন্দু, নন্দীগ্রামে বোঝালেন হরিনামের মাহাত্ম্য
আরও পড়ুন: কোনও মুসলিমকে ভোটের টিকিট দেব না, ঘোষণা বিজেপি মন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী সোমবার বলেন, ‘‘নয়া কৃষি আইন কতটা কাজের, তা আগামী দিনে বোঝা যাবে। দশকের পর দশক ধরে ছলচাতুরি করে আসা দলগুলি কৃষকদের বন্ধু নয়। কিন্তু এ বার ছল করে নয়, গঙ্গাজলের মতো পবিত্র ইচ্ছা নিয়ে ময়দানে নামা হয়েছে।’’ বিরোধীদের বিঁধে মোদীর বক্তব্য, ‘‘২৪ ঘণ্টা মিথ্যা কথা বলছে বিরোধীরা।’’
সরাসরি পশ্চিমবঙ্গের নাম না করে বাংলার মতো যে রাজ্যগুলি ‘পিএম কিসান সম্মান নিধি’র মতো প্রকল্প চালু করেনি, তাদেরও এক হাত নেন মোদী। বলেন, ‘‘একটা রাজ্যে এমন মিথ্যা বলেছিল যে কৃষকরাই বলে বসেছিলেন, আমাদের টাকা চাই না। ফলে ওই রাজ্যে ওই প্রকল্প লাগুই হয়নি। তবে নির্বাচনে আমাদের সরকার তৈরি হলে ওখানকার কৃষকদের ওই প্রকল্পের এক্তিয়ারে আনবই।’’ ‘অন্নদাতা’দের হাত ধরেই ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর সূচনা হবে বলেও আশাপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত কেন্দ্র্রের ‘পিএম কিসান সম্মান নিধি’ প্রকল্পে কৃষককে বছরে ৬ হাজার টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রায় একই রকম প্রকল্প চালু করেছে রাজ্যে সরকারও। ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের বছরে ৫ হাজার টাকা সাহায্যের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য।