Advertisement
E-Paper

‘ঘুম ছুটেছে’ ঋণ নিয়ে, গভীর রাতে বৈঠক প্রধানমন্ত্রীর 

তিন রাজ্যে গদি হারিয়ে লোকসভা ভোটের মুখে এ বার নিজেই কৃষিঋণ মকুব নিয়ে বৈঠকে বসলেন নরেন্দ্র মোদী। 

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৪৬
নরেন্দ্র মোদী।—ছবি পিটিআই।

নরেন্দ্র মোদী।—ছবি পিটিআই।

তিন রাজ্যে গদি হারিয়ে লোকসভা ভোটের মুখে এ বার নিজেই কৃষিঋণ মকুব নিয়ে বৈঠকে বসলেন নরেন্দ্র মোদী।

বুধবার রাতে নিজের বাসভবনে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। প্রায় তিন ঘণ্টার ওই বৈঠকে কৃষকদের ঋণ মকুব ও সুরাহা দেওয়ার জন্য মূলত তিনটি পথ খতিয়ে দেখা হয়েছে। এক, মধ্যপ্রদেশের ‘ভাবান্তর যোজনা’-র ধাঁচে ফসলের সহায়ক মূল্যের থেকে বাজারের দাম পড়ে গেলে সেই ফারাক চাষিদের দেওয়া। দুই, তেলঙ্গানার ‘রায়তু বন্ধু’ প্রকল্পের মতো চাষের মরসুমের শুরুতেই চাষিদের সার-বীজ কেনার জন্য অর্থ দেওয়া। যাতে তাঁদের ঋণ নিতেই না হয়। তিন, গোটা দেশে চাষিদের ঋণ মকুব করে দেওয়া। তবে বিপুল অর্থের প্রয়োজনে যা কার্যত নাগালের বাইরে বলেই মনে করছেন মন্ত্রীরা। এর সঙ্গে কিসান ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পে ঋণের অঙ্কের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো নিয়েও আলোচনা হয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত হওয়া এই বৈঠকের খবর শুনে কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া, রাহুল গাঁধীর কথাই তা হলে সত্যি হল।

প্রধানমন্ত্রীর সত্যিই ঘুম ছুটে গিয়েছে! মোদী অবশ্য আজ হিমাচল প্রদেশে গিয়ে অভিযোগ করেছেন, রাহুল মিথ্যে বলছেন। তিন রাজ্যে চাষিদের ঋণ মকুব করার দাবি প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এটা করা যায় না। ভোটে জেতার জন্য করা হচ্ছে। চাষিদের পিঠে ছুরি মারা হচ্ছে। করতে না-পারলে চাষিদের বলে দিন, ওঁরা মেনে নেবেন। মিথ্যে বলে জীবন নিয়ে খেলবেন না।’’

২০০৮-এ ইউপিএ সরকারের ঋণ মকুবকে আগেই ‘ভাঁওতা’ আখ্যা দিয়েছিলেন মোদী। আজ ফের বলেন, ‘‘২০০৮-এ চাষিদের ঋণ ছিল ৬ লক্ষ কোটি টাকা। ওরা ৬০ হাজার কোটি টাকার ঋণ মকুবের কথা ঘোষণা করেছিল। মিটিয়েছিল মাত্র ৫২ হাজার কোটি টাকা।’’ এখন পঞ্জাবে কংগ্রেস ও কর্নাটকে জেডিএস-কংগ্রেস সরকার ঋণ মকুবের দাবি করলেও বাস্তবে কিছুই করেনি বলে মোদীর দাবি।

কিন্তু প্রকাশ্যে এ কথা বললেও ঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতি যে কংগ্রেসকে ভোটের বাক্সে ফায়দা দিতে পারে, তা বিজেপি নেতারা ভালই আঁচ করতে পারছেন। এত দিন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির যুক্তি ছিল, কেন্দ্রের পক্ষে কোনও ভাবেই গোটা দেশে কৃষিঋণ মকুব করা সম্ভব নয়। সেই অবস্থান থেকে সরে এসে, এখন তিনি বলছেন, ‘‘এ বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নিলেই জানানো হবে।’’

অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, গোটা দেশে ঋণ মকুব করতে হলে ৩ থেকে ৩.৫ লক্ষ কোটি টাকা দরকার। যা জোগানো অসম্ভব। সেই তুলনায় ‘ভাবান্তর যোজনা’-র অনুকরণে সুরাহা দিতে হলে ৫০ হাজার কোটি টাকা এবং ‘রায়তু বন্ধু’ প্রকল্প অনুসরণ করতে হলে ১ লক্ষ কোটি টাকার কাছাকাছি লাগবে। অর্থ মন্ত্রক শীর্ষ সূত্রের দাবি, যা করা হবে, রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা ৩.৩ শতাংশের মধ্যে থেকেই হবে। খয়রাতি করতে গিয়ে ঘাটতি নাগালের বাইরে চলে গেলে বিদেশি লগ্নিকারীদের কাছে ভুল বার্তা যাবে। মূল্যায়নকারী সংস্থা বা রেটিং এজেন্সিগুলিও দেশের অর্থনীতি সম্পর্কে বিরূপ মনোভাব নিতে পারে। সেই ঝুঁকি নিতে চাইছে না অর্থ মন্ত্রক।

Narendra Modi Amit Shah Arun Jaitley Farmer Loan Meeting BJP Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy