অনুপ্রবেশের কারণে দেশের একাধিক এলাকায় জনবিন্যাস পাল্টে যাচ্ছে বলে ফের সরব হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ স্বাধীন ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বল্লভভাই পটলের দেড়শোতম জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে মোদী অনুপ্রবেশকারীদের দেশের একতার জন্য বিপদ বলে দাগিয়ে তাদের বিতাড়ন নিশ্চিত করতে শপথবাক্য পাঠ করান।
আগামী সপ্তাহে বিহারে নির্বাচন। আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গ, অসমের মতো পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে ভোট। বিজেপি মনে করে, অনুপ্রবেশের মাধ্যমে ওই সব রাজ্যের সীমান্ত এলাকার জনবিন্যাস পাল্টে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তা ঠেকাতে দেশ জুড়়ে ‘ডেমোগ্রাফি মিশন’ শুরু করার ঘোষণা গত মাসে করেছেন মোদী। রাজনীতিকদের মতে, বিহারে ভোটের আগে অনুপ্রবেশের বিষয়টি পরিকল্পিত ভাবে তুলে ধরে হিন্দু ভোটের মেরুকরণ করতে মরিয়া মোদী। বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের মতে, অনুপ্রবেশ নিয়ে মোদীর বার্তা শুধু বিহারের জন্য নয়, ভোটমুখী অসম, পশ্চিমবঙ্গকেও বার্তা দিতে চেয়েছেন তিনি।
আজ বিরোধীদের ভূমিকারও তীব্র সমালোচনা করেছেন মোদী। ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে অনুপ্রবেশকারীদের পক্ষে সওয়াল করে কিছু রাজনৈতিক দল সমর্থন জোগাচ্ছে, পথে নামছে বলে সরব হন মোদী। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘অনুপ্রবেশকারীরা দেশের জন্য বিপদ হওয়া সত্ত্বেও আগের সরকার চোখ বন্ধ করে রেখেছিল। ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে এরা দেশের নিরাপত্তাকে বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পিছপা হয়নি। সেই কারণে প্রথম বার দেশ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে নির্ণায়ক যুদ্ধে নেমেছে। ঘোষণা করা হয়েছে ডেমোগ্রাফিক মিশনের।’’ যদিও সেই ডেমোগ্রাফিক মিশন আদতে কী, তা কী ভাবে কাজ করবে, কোন পথে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করবে, তার কোনও ব্যাখ্যা আজও দেননি মোদী। তবে অনুপ্রবেশ-বিতর্ক উস্কে মোদী বলেন, ‘‘বাস্তব হল, দেশের সুরক্ষা নিয়ে যদি প্রশ্ন ওঠে, তা হলে প্রত্যেক দেশবাসী এতে প্রভাবিত হতে বাধ্য।’’ তাই আজ রাষ্ট্রীয় একতা দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে উপস্থিত সকলকে অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়ন করার শপথবাক্যও পাঠকরান প্রধানমন্ত্রী।
রাজনীতিকদের মতে, বিহার ভোটের আগে হিন্দু মেরুকরণের হাওয়া আরও তীব্র করতে মরিয়া হয়েই অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়টি নিয়ে সুর এত চড়া করছেন মোদী। পশ্চিমবঙ্গ ও অসমে ভোট যত এগিয়ে আসবে, তত অনুপ্রবেশ প্রশ্নে সুর চড়াবে বিজেপি। বিরোধীদের কটাক্ষ, অনুপ্রবেশ হয়ে থাকলে মোদীর উচিত অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণাধীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে জবাবদিহি চেয়ে উপযুক্তব্যবস্থা নেওয়া।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)