প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রয়াত মা হীরাবেনকে নিয়ে আবার কুকথার অভিযোগ উঠল বিহারে। অভিযোগ, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের ‘বিহার অধিকার যাত্রা’য় প্রধানমন্ত্রীর মা-কে নিয়ে কুকথা বলা হয়েছে। মহুয়া বিধানসভায় আরজেডির সভা থেকে এই কুমন্তব্য করা হয়েছে বলে দাবি বিজেপির। শুধু তা-ই নয়, সেই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনে আরজেডির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তারা (যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম।)। আর এই অভিযোগকে ঘিরে জাতীয় রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে।
যদিও এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে আরজেডি। তাদের পাল্টা দাবি, ভিডিয়োকে বিকৃত করে আরজেডিকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভোটের আগে এই ধরনের অভিযোগ তুলে রাজ্যবাসীকে বিভ্রান্ত করার একটা চক্রান্ত চলছে। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে বিহারের রাজনীতিতে ডামাডোল শুরু হয়েছে। বিহারের রাজ্য বিজেপি তাদের এক্স হ্যান্ডলে শনিবার রাতে এই ঘটনার একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেছে। এক্স হ্যান্ডলে এই অভিযোগ তুলে বিজেপি লিখেছে, ‘‘তেজস্বী যাদব আবার প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াত মা-কে নিয়ে কুমন্তব্য করেছেন। সভা থেকে আরডেজির কর্মী, সমর্থকেরাও কুকথার স্লোগান তুলছিলেন, আর তেজস্বী তাদের উৎসাহ দিচ্ছিলেন।’’ আরও বলা হয়েছে, ‘‘আরজেডি-কংগ্রেসের একই লক্ষ্য— মা-বোনেদের নিয়ে কুকথা বলা। ওদের হতাশা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিহারের মা-বোনেরা এর জবাব দেবেই।’’
তবে বিজেপির এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ খণ্ডন করেছেন মহুয়ার আরজেডি বিধায়ক মুকেশ রৌশন। তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের দলের কেউই প্রধানমন্ত্রীর মায়ের সম্পর্কে কোনও কুকথা বলেননি। যে ভিডিয়ো বিজেপি শেয়ার করেছে, সেখানে তেজস্বী কী বলছেন, তা স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। আরজেডিকে কালিমালিপ্ত করতেই ভিডিয়ো বিকৃত করে ছাড়া হয়েছে।’’
এ মাসের গোড়ার দিকে একই অভিযোগ উঠেছিল বিহারে। সেই অভিযোগ ওঠে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর বিহারে ‘ভোটাধিকার যাত্রা’-র সময়। দ্বারভাঙায় এক কর্মসূচি চলাকালীন প্রধানমন্ত্রীর মায়ের মায়ের উদ্দেশে কুকথা বলা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তার পর পরই বিহারে যান প্রধানমন্ত্রী মোদী। তাঁর মৃত মায়ের নামে কুকথা বলার অভিযোগে কংগ্রেস এবং আরজেডিকে নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সময় তিনি বলেন, ‘‘মা আমাদের কাছে পৃথিবীতুল্য। মা আমাদের আত্মসম্মান। কিছু দিন আগে এই বিহারে যা ঘটেছে, তা আমি কল্পনাও করতে পারি না। আরজেডি-কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে আমার মাকে কুকথা বলা হয়েছে। এই কুকথা শুধুমাত্র আমার মায়ের অপমান নয়। এটি দেশের সকল মা, বোন এবং মেয়ের অপমান। আমি জানি, ওই কথাগুলি শুনে বিহারের প্রতিটি মায়ের কতটা খারাপ লেগেছে। আমার মনে যে যন্ত্রণা হচ্ছে, বিহারবাসীও সেই একই যন্ত্রণায় ভুগছেন।’’
তার পরেও সম্প্রতি বিহার প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করা একটি ভিডিয়ো ঘিরে নতুন করে তৈরি হয় বিতর্ক। এআইয়ের সাহায্যে তৈরি ওই ভিডিয়োয় প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মাকে দেখানো হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় কংগ্রেস নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়।