রোড-শো: বারাণসীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রচার। ছবি: পিটিআই
উত্তরপ্রদেশে ভোটের বাকি আর একটি পর্ব। বারাণসী-সহ সাত জেলার ৪০টি আসনে। শেষ পর্বের এই বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিন দিন রীতিমতো বারাণসীতে ঘাঁটি গেড়ে বসে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যা দেখে বিরোধীরা বলছেন, শেষ প্রহরে পুরোদস্তুর মেরুকরণের রাজনীতিতে নেমে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
নিজের লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতে হিন্দুত্বের জিগির তুলে সংলগ্ন আসনগুলিতে ভাল ফল করার চেষ্টা করছেন। সে ক্ষেত্রে রাজ্যে ক্ষমতা দখলের দৌড়ে টিকে থাকবে বিজেপি। শেষ দফায় এসে মোদীর এই ‘প্রচারের বাড়াবাড়ি’ দেখে আজ কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মোদী-বিরোধী বিজেপি নেতা শত্রুঘ্ন সিন্হাও। তাঁর কথায়, ‘‘মরিয়া হয়ে উঠেছেন প্রধানমন্ত্রী।’’
বারাণসীর মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে গত কাল পুজো দিতে দেখা গিয়েছিল মোদীকে। আজ ঘুরলেন পথে-পথে। কর্মসূচি অনুযায়ী আজ ছিল মোদীর রোড শো। দুপুরে শুরু হওয়া প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ব্যাপী সেই রোড শো শেষ হতে হতে সন্ধে গড়িয়ে যায়। হুড খোলা গাড়িতে হাত জোড় করে একেবারে সাবেকি নেতার ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। মানুষের ছোড়া ফুলের প্রত্যুত্তর দিয়েছেন পাল্টা ফুল ছুড়ে।
রোড শো-র শেষে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য মহাত্মা গাঁধী কাশী বিদ্যাপীঠকে বেছে নিয়েছিলেন মোদী। কাশী বিশ্বনাথের শহরে দাঁড়িয়ে শুরুতেই ‘হর হর মহাদেব’ বলে প্রচারের সুর বেঁধে দেন তিনি। কখনও বলেছেন, মা গঙ্গার ডাকেই তিনি আজ বারাণসীতে। কখনও আবার মার্ক টোয়েনকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, ‘‘ইতিহাসের চেয়েও পুরনো শহর হল বারাণসী।’’
তাঁর দাবি, ঐতিহ্য বজায় রেখেই আধুনিক ভাবে গড়ে তোলা হবে এই শহরকে। জানিয়েছেন, পর্যটনের হাত ধরে বারাণসীর অর্থনীতি যাতে সজীব হয়ে ওঠে তার জন্য তিনি দায়বদ্ধ।
মেরুকরণের অস্ত্র আর বিরোধী শিবিরকে আক্রমণ— এই দুইয়ের প্যাকেজে আজ কিস্তিমাত করতে চেয়েছেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্র হওয়ায় কী ভাবে উত্তরপ্রদেশের সপা সরকার বারাণসীর সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করেছে তা-ও বিশদে তুলে ধরেছেন। কেন্দ্র পরিকাঠামো উন্নয়নে উত্তরপ্রদেশকে অর্থ পাঠালেও রাজ্য সরকার সেই টাকা খরচে ব্যর্থ বলে দাবি মোদীর। রাহুল গাঁধী-মায়াবতীকেও ছেড়ে কথা বলেননি তিনি। বক্তৃতায় এসেছে নোট বাতিল থেকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক প্রসঙ্গ।
বিধানসভা ভোটের শেষ পর্বে বারাণসীতে মোদীর মরণপণ প্রচার দেখে গত কালই সমালোচনা করেছিলেন এনডিএ শরিক বিহারের রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টির নেতা উপেন্দ্র কুশওয়াহা। আজ দলের নেতা শত্রুঘ্ন সিন্হার পাশাপাশি কটাক্ষ করেছেন সপা সাংসদ নরেশ অগ্রবাল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিধানসভা আসনগুলির ভবিষ্যৎ মোটেই সুরক্ষিত নয়। তাই এত আগ্রাসী তিনি।’’
সত্যিই কি তাই! জানতে অপেক্ষা করতে হবে আর সাত দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy