Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অধ্যাপকের বাড়িতে তল্লাশি, সরব ডিইউ

মঙ্গলবার দুপুরে জেনি প্রথমে ফেসবুকে লেখেন সকাল সাড়ে ছ’টায় তাঁদের বাড়িতে তল্লাশির জন্য পুলিশের কড়া নাড়ার কথা। পরে টুইটারে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেন হ্যানি।

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়।

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:০১
Share: Save:

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হ্যানি বাবু এমটি-র বাড়িতে ভীমা-কোরেগাঁও মামলার সূত্রে হানা দিল পুণে পুলিশ। হ্যানি এবং তাঁর স্ত্রী জেনি রোয়েনার অভিযোগ, সার্চ ওয়ার‌্যান্ট ছাড়াই প্রায় ছ’ঘণ্টা তাঁদের নয়ডার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছে হ্যানি বাবুর ল্যাপটপ, বই, ফোন, পেনড্রাইভ। তল্লাশির সময়ে বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখতে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল জেনি এবং তাঁদের মেয়ের মোবাইলও। এর তীব্র নিন্দা করে বিবৃতি জারি করেছে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিষদ।

মঙ্গলবার দুপুরে জেনি প্রথমে ফেসবুকে লেখেন সকাল সাড়ে ছ’টায় তাঁদের বাড়িতে তল্লাশির জন্য পুলিশের কড়া নাড়ার কথা। পরে টুইটারে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেন হ্যানি। লেখেন, ‘‘পরিবারের সঙ্গে নয়ডায় থাকি। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ প্রায় এক দশক ইংরেজির অ্যাসোসিয়েট অধ্যাপক। আজ সকাল সাড়ে ছ’টায় আমাদের বাড়ির দরজায় কড়া নাড়েন প্রায় কুড়ি জন। দাবি করেন তাঁরা পুণে পুলিশের অপরাধদমন শাখা থেকে আসছেন। জনা পাঁচেক উর্দি পরা। বাকিরা সাধারণ পোশাকে। সার্চ ওয়ার‌্যান্ট দেখতে চাইলে জানান, নেই। এ ক্ষেত্রে তা জরুরিও নয়! শুধু পরিচয়পত্র দেখান শিবাজি পওয়ার নামে অফিসার।’’

হ্যানির অভিযোগ, ছ’ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চলাকালীন বাইরের কারও সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। কেড়ে নেওয়া হয়েছিল ফোন। প্রতিটি ঘর তন্ন তন্ন করে খুঁজে হ্যানির ল্যাপটপ ইত্যাদি তো নিয়ে গিয়েছেনই, সেই সঙ্গে পাল্টাতে বাধ্য করেছেন প্রতিটি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড। ফলে ওই সমস্ত অ্যাকাউন্ট এখন পুলিশের কব্জায় বলে তাঁর দাবি।

অধ্যাপকের প্রশ্ন, ওই ল্যাপটপ, হার্ড ডিস্কে তাঁর বহু বছরের পরিশ্রমের ফসল রয়েছে। কোনও নির্দিষ্ট কারণ না দেখিয়ে পুলিশ তা নিয়ে যায় কী করে? কোন যুক্তিতেই বা হঠাৎ এমন তল্লাশি চালায় বাড়িতে? পুণে পুলিশের বক্তব্য, সেখানকার বিশ্রামবাগ পুলিশ স্টেশনে দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেই এই তল্লাশি।

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন বিবৃতিতে জানিয়েছে, হ্যানি বাবু শুধু ভাল শিক্ষকই নন, গণতান্ত্রিক অধিকারের সজাগ প্রহরী। ওয়ার‌্যান্ট ছাড়া তল্লাশি চালানো গণতন্ত্রের মূলে কুঠারাঘাত। এই ধরনের সব চেষ্টার প্রতিরোধ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করবে বলে তাঁদের দাবি।

২০১৮ সালে মহারাষ্ট্রের ভীমা-কোরেগাঁওয়ে দলিতদের বিজয় দিবস পালন উপলক্ষে অশান্তি ছড়িয়েছিল। সেই ঘটনায় ‘শহুরে নকশাল’দের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ ওঠায় দেশ জুড়ে অভিযানে নামে পুলিশ। গ্রেফতার হন সমাজকর্মী সুধা ভরদ্বাজ, কবি ভারভারা রাও। জেলে যেতে হয় গৌতম নাওলাখা, অরুণ ফেরেরা, ভার্নন গঞ্জালভেস প্রমুখকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bhima Koregaon Case Delhi Delhi University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE