উপ মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির সামনে বিক্ষোভ। ছবি: পিটিআই।
গত দু’মাসে ১১টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। যাঁরা আছেন, তাঁদের অবস্থাও কহতব্য নয়। দিল্লি সরকার পরিচালিত ‘আশা কিরণ’-এ আচমকা হানা দিয়ে বিস্মিত দিল্লির মহিলা কমিশন। মানসিক প্রতিবন্ধীদের থাকার এই সরকারি আবাসে এক রাত কাটিয়েই সমাজকল্যাণ দফতরের সচিবকে নোটিস পাঠিয়েছেন মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতি মালীবাল। তাঁর বক্তব্য, এই হোমে দিনের পর দিন ভয়ানক ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, শৌচাগারগুলি ভীষণ অপরিচ্ছন্ন এবং কর্মচারীর সংখ্যাও যথেষ্ট নয়।
গত শনিবার কমিশনের অপর এক সদস্যা প্রমীলা গুপ্ত ও আরও কিছু কর্মীকে নিয়ে আশা-কিরণে থাকতে গিয়েছিলেন স্বাতি। একেবারেই আচমকা, হোম কর্তৃপক্ষকে কিচ্ছু না জানিয়ে। সেখানে এক রাত কাটিয়েই ক্ষিপ্ত চেয়ারপার্সন। তিনি জানিয়েছেন, হোমের মহিলা বিভাগে পোশাক খুলে রেখে দেওয়া হয় অনেক আবাসিকের। করিডরে সিসিটিভি লাগানো, অথচ সেখানেই নগ্ন অবস্থায় ঘুরে বেড়াতে বাধ্য মহিলা আবাসিকরা। সেই সিসিটিভি ফুটেজ আবার পরীক্ষা করেন হোমের পুরুষ কর্মীরা। স্বাতির আরও অভিযোগ, সাড়ে তিনশো জনের থাকার জাগায় গাদাগাদি করে রাখা হচ্ছে সাড়ে চারশো জনকে। প্রতি জন আবাসিকের জন্য এই শীতে বরাদ্দ হয়নি একটি করে কম্বলও। হোমে নেই হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা। অক্ষম আবাসিকরা কার্যত মাটিতে হামাগুড়ি দিয়ে নোংরা শৌচাগারে যাচ্ছেন। চিকিৎসকের অবস্থাও তথৈবচ। গোটা হোমে এক জন মনস্তত্ত্ববিদ রয়েছেন। প্রয়োজনের তুলনায় কর্মীও কম।
হোমের এই নারকীয় অবস্থা কেন, তা জানতে আলাদা করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলেছেন স্বাতি। এ বিষয়ে সরকারকে একটি রিপোর্টও পাঠাতে হবে হোম কর্তৃপক্ষকে। মহিলা কমিশনের অভিযোগগুলি সামনে আসার পর পরই বিষয়টি নিয়ে কেজরীবাল সরকারকে আক্রমণ করতে শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। দিল্লি বিজেপির সভাপতি মনোজ তিওয়ারি জানান, উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়ার পদত্যাগ করা উচিত, সমাজকল্যাণ দফতর তিনিই দেখেন। তিওয়ারি বলেন, ‘‘একটা শিশুর মৃত্যুর খবর যদি আগে থেকে রিপোর্ট করা হতো, তা হলে হয়তো এতগুলো নিরীহ শিশুকে এ ভাবে অবহেলায় মরতে হতো না।’’