Advertisement
E-Paper

অভাবেও বড়সড় আলিয়াকে আগলে রেখেছেন বাবা-মা

মেয়েটি যখন প্রথম পৃথিবীর আলো দেখেছিল তখন ওজন ছিল চার কিলোগ্রাম। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, স্বাভাবিক শিশুদের থেকে খানিকটা বেশিই ওজন, কিন্তু চিন্তার কিছু নেই।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:৫৩
২২ মাসের আলিয়া। ছবি: চন্দন পাল।

২২ মাসের আলিয়া। ছবি: চন্দন পাল।

মেয়েটি যখন প্রথম পৃথিবীর আলো দেখেছিল তখন ওজন ছিল চার কিলোগ্রাম। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, স্বাভাবিক শিশুদের থেকে খানিকটা বেশিই ওজন, কিন্তু চিন্তার কিছু নেই। বয়স বাড়লেই ঠিক হয়ে যাবে। মেয়ের মা-বাবা তখনকার মতো নিশ্চিন্ত হন। বোকারো থার্মাল পাওয়ার এলাকার পিরওয়াতান্ত গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় দর্জি মহম্মদ সেলিম ও তাঁর স্ত্রী শবনমের অভাবের সংসারে এক চিলতে ঘর আলো করে হাসত সে। শবনম আদর করে তাঁর মেয়ের নাম রেখেছিলেন আলিয়া।

কিন্তু সব কিছু বদলে গেল ছ’মাস পর থেকে। প্রতি মাসে আলিয়ার ওজন ১ কিলো করে বাড়তে বাড়তে ২২ মাসে তার ওজন ২৪ কিলোগ্রাম। ২২ মাসের শিশুকে সাত বছরের বালিকার মতো দেখতে লাগে।

মাস গেলে দু’ থেকে আড়াই হাজার টাকা উপার্জন করেন সেলিম। চূড়ান্ত দারিদ্রের সংসারে আলিয়াকে বাঁচানোর লড়াই শুরু করেছেন সেলিম। তিনি জানান, আলিয়ার আগে তাঁদের এক মেয়ে জন্মেছিল। নাম ছিল সিমরন। আলিয়ার মতো না হলেও জন্মানোর বছর খানেক পর থেকে সিমরনের ওজনও অস্বাভাবিক বাড়তে থাকে। শেষে সাত বছর বয়সে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে সে মারা যায়।

দারিদ্রের সংসারে ২২ মাসের আলিয়ার খিদে খুবই বেশি। শবনম জানান, সকালে দু’টো রুটি, চা বা এক গ্লাস দুধ।। তাঁর স্বামী যে পরিমাণ ভাত খান দুপুরে ও রাতে, সেই পরিমাণ ভাত খায় আলিয়া। সঙ্গে এক বাটি ডাল, তরকারি ও দু’টো রুটি। ছোট্ট মেয়েটার অস্বাভাবিকতা বলতে গিয়ে চোখ ভিজে ওঠে শবনমের।

শুধু কি তাই? প্রতি মাসে ওজন বাড়ছে এক কিলোগ্রাম করে। তাই জামাও ছোটো হয়ে যায় আলিয়ার। দর্জি বাবার ছোট্ট মেয়ের জামা কাপড় বানাতে বানাতেই দিন কেটে যায়। সেলিম জানান, আজ যে জামাটা বানাচ্ছেন সেই জামা দু’মাস পরেই পরতে পারে না আলিয়া। পড়শিরাও আলিয়াকে জামাকাপড় দিয়ে সাহায্য করে বলে জানালেন সেলিম।

২০০৫-এ এমন এক ‘বিরাট শিশু’ লোকমানকে ঘিরে তোলপাড় হয় বাংলা। মুর্শিদাবাদের লোকমানের ১১ মাস বয়সে ওজন ছিল ২৩ কিলোগ্রাম। প্রতিদিন পাঁচ লিটার দুধ আর এক কিলো চালগুঁড়ো খাওয়াতে
হত তাকে। কলকাতার এসএসকেএমে
ভর্তি করা হয় তাকে। ‘অস্বাভাবিকতা’র কারণ খোঁজার চেষ্টা শুরু করেছিলেন ডাক্তাররা। মাঝপথেই গলায় দুধ আটকে মারা যায় লোকমান।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy