E-Paper

প্রার্থী বাছাইয়ে নয়া পথ, মহাজোটকেও প্রস্তাব পি কে’র

উৎসবের পর্ব মিটলেই বিহারে চলে আসবে ভোটের পর্ব। রাজ্যের ২৪৩টি আসনেই এ বার তাঁর ‘জন সুরজ’ দলের প্রার্থী দিতে চান প্রশান্ত ( পি কে)। প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য তাঁর পদ্ধতিও অন্যান্য দলের চেয়ে পৃথক।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৬:২১
‘জন সুরজ’ পার্টির সম্মেলনে প্রশান্ত কিশোর। গয়ায়।

‘জন সুরজ’ পার্টির সম্মেলনে প্রশান্ত কিশোর। গয়ায়। —নিজস্ব চিত্র।

সরাসরি রাজনীতির ময়দানে নামার আগে তিনি কাজ করেছেন পর্দার পিছনে। প্রথাগত রাজনীতিকদের থেকে তাঁর আদব-কায়দা আলাদা। বিহারে বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতেও নতুন কৌশল নিয়ে এগোচ্ছেন প্রশান্ত কিশোর।

উৎসবের পর্ব মিটলেই বিহারে চলে আসবে ভোটের পর্ব। রাজ্যের ২৪৩টি আসনেই এ বার তাঁর ‘জন সুরজ’ দলের প্রার্থী দিতে চান প্রশান্ত ( পি কে)। প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য তাঁর পদ্ধতিও অন্যান্য দলের চেয়ে পৃথক। একেবারে তৃণমূল স্তরে কর্মীদের মতামত নিয়ে প্রার্থী বেছে নিতে চাইছেন তিনি। তারই পাশাপাশি বিহারে প্রধান বিরোধী দল আরজেডি-র জন্যও ‘সমঝোতা’র সূত্র ভাসাচ্ছেন পি কে। বলছেন, বিজেপি তথা এনডিএ-কে হারানোর জন্য বিরোধী মহাজোট যেখানে মুসলিম প্রার্থী দেবে, ‘জন সুরজ’ সেখানে মুসলিম কোনও মুখকে লড়াবে না। বিনিময়ে ‘জন সুরজে’র মুসলিম প্রার্থীদের বিরুদ্ধে মহাজোটের মুসলিম প্রার্থী রাখা চলবে না। অন্য দিকে আবার নীতীশ কুমারের সরকারে বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী সম্রাট চৌধরি, অশোক চৌধরি, মঙ্গল পাণ্ডেদের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ এনে শাসক জোটকে বিপাকে ফেলছেন পি কে।

‘জন সুরজ’ সূত্রের খবর, বিহারের ২৪৩টি বিধানসভা কেন্দ্রে দু’দফায় প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রাক্তন ভোট-কুশলী পি কে। দলের দুই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক, সংশ্লিষ্ট জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও জেলা সভাপতি থাকছেন সেই দলে। তাঁদের উপস্থিতিতে প্রতি বিধানসভা কেন্দ্রে সম্মেলনে ব্লক, পঞ্চায়েত ও বুথ স্তর থেকে কর্মীদের ডাকা হচ্ছে। যুব, কৃষক, সংখ্যালঘু, তফসিলি, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি) শাখাকেও অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে এই প্রক্রিয়ায়। কর্মীরা মৌখিক ও লিখিত ভাবে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ও তাঁকে বেছে নেওয়ার কারণ জানাচ্ছেন। আর যাঁরা আগেই প্রার্থী হতে চেয়েছেন, তাঁদের আবেদনও যাচাই করে নেওয়া হচ্ছে এই সম্মেলনে। এক একটা কেন্দ্রে দু’বার করে সম্মেলনে কর্মীদের মুখোমুখি হয়ে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা তৈরি করা হবে। তার উপরে হবে ঝাড়াই-বাছাই। ‘জন সুরজে’র রাজ্য সভাপতি মনোজ ভারতী ও রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার এই প্রক্রিয়া দেখভাল করছেন। তাঁদের বক্তব্য, জেলা নেতৃত্ব প্রার্থীদের নাম সুপারিশ করে পাঠিয়ে দিলেন— এই চলতি রেওয়াজ থেকে বেরিয়ে তাঁরা মাঠে-ময়দানের কর্মীদের মত নিয়ে এগোতে চাইছেন।

বিহারে এনডিএ সরকারের তিন মন্ত্রী সম্রাট, অশোক ও মঙ্গলের বিরুদ্ধে বাজার দরের চেয়ে কম দামে জমি নেওয়া, ট্রাস্টকে কাজে লাগিয়ে জমি জোগাড় করা, আয় বহির্ভূত সম্পত্তি গোপন করা-সহ দুর্নীতির নানা অভিযোগ এনেছে পি কে-র দল। উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট অষ্টম শ্রেণি পাশের শংসাপত্র দেখিয়ে ভোটে লড়ে ‘ডি লিট’ কী ভাবে নিয়েছেন, সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে। তিন মন্ত্রীই পি কে-র নামে মানহানির মামলার নোটিস পাঠিয়েছেন। জবাবে পি কে বলে চলেছেন, আরও চিঠি তৈরি রাখুন। আমরা আরও কাগজ বার করব!

রাজনৈতিক শিবিরে চর্চা চলছে, বিজেপি তথা এনডিএ-র বিরুদ্ধে প্রবল ভাবে সরব হয়ে পি কে যত জনসমর্থন টানবেন, বিরোধী মহাজোটের তত সমস্যা হবে। মহাজোটে আসন-রফার চূড়ান্ত মীমাংসাও এখনও হয়নি। এরই মধ্যে সংখ্যালঘু ভোটের বিভাজন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন তেজস্বী যাদবেরা। তারই প্রেক্ষিতে পি কে-র মন্তব্য, ‘‘মহাজোটের জন্য আমাদের একটা প্রস্তাব আছে। যেখানে মহাজোট মুসলিম প্রার্থী দেবে, আমরা সেখানে মুসলিম কাউকে দাঁড় করাব না। মুসলিমদের নিয়ে যদি আরজেডি এবং মহাজোটের খুব চিন্তা থাকে, তারাও একই ঘোষণা করুক! যেখানে জন সুরজের মুসলিম প্রার্থী থাকবে, সেখানে মহাজোট কোনও মুসলিম মুখ বাছবে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

PK bihar election Prashant Kishor

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy