বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে সম্মুখসমরে দেখা যেতে পারে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব এবং প্রাক্তন ভোটকুশলী তথা জন সুরাজ পার্টির নেতা প্রশান্ত কিশোর ওরফে পিকে-কে। এ বারও বিহারের বৈশালী জেলার রাঘোপুর কেন্দ্র থেকে লড়াই করলেন লালু-পুত্র তেজস্বী। শনিবার এই কেন্দ্র থেকে প্রতিদন্দ্বিতা করার ইঙ্গিত দিয়েছেন পিকেও। একই সঙ্গে তাঁর পূর্বানুমান, রাঘোপুর কেন্দ্রের প্রার্থী হলে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর মতোই পরিণতি হতে পারে তেজস্বীর। তেমন পরিস্থিতি এড়াতে তেজস্বীকে দু’টি কেন্দ্র থেকে লড়াই করার পরামর্শও দিয়েছেন পিকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের অমেঠী এবং কেরলের ওয়েনাড় কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন রাহুল। ওয়েনাড় থেকে জয়ী হলেও অমেঠীতে বিজেপি প্রার্থী স্মৃতি ইরানির কাছে হেরে যান অধুনা রায়বরেলীর কংগ্রেস সাংসদ রাহুল। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শনিবার পিকে বলেন, “আমি রাঘোপুর থেকে ভোটে লড়লে তেজস্বী যাদবের দু’টি কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়া উচিত। কারণ তিনি অমেঠীতে যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন, তেজস্বীও সেই পরিস্থিতিরই শিকারই হবেন।” অর্থাৎ, রাঘোপুর থেকে তিনি ভোটে লড়লে তেজস্বী জিতবেন না বলেই মনে করছেন পিকে।
রাঘোপুর অবশ্য আরজেডির ‘শক্ত ঘাঁটি’ হিসাবেই পরিচিত। এই কেন্দ্র থেকে দু’বার জয়ী হয়েছিলেন লালু। তিন বার জয়ী হন লালু-পত্নী রাবড়ী দেবী। ২০১৫ সাল থেকে এই কেন্দ্রের বিধায়ক অধুনা বিহারের বিরোধী দলনেতা তেজস্বী। পিকে অবশ্য জানিয়েছেন, রাঘোপুর কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে তিনি এখনও চূড়়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। শনিবার তিনি বলেন, “আমি রাঘোপুর যাচ্ছি। আমি ওই আসনটি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছি। ওখানকার মানুষদের সঙ্গে আমি কথা বলব এবং তাঁদের মনোভাব চেষ্টা করব।” রবিবারই রাঘোপুর এবং বিহারের অন্য আসনগুলি নিয়ে তাঁর দল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন পিকে। রবিবার জন সুরাজ পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক রয়েছে। তার পরেই বাকি আসনগুলির বাকি প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিতে পারে পিকে-র দল।
বিহারের বিধানসভা ভোটে ২৪৩ আসনের সবক’টিতেই প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন পিকে। বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় ৫১টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে জন সুরাজ পার্টি। জন সুরাজ পার্টির বিশিষ্ট প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন জনপ্রিয় ভোজপুরি গায়ক রীতেশরঞ্জন পান্ডে। তিনি রোহতাস জেলার কারগাহর বিধানসভা আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তালিকায় রয়েছেন, পরিচিত কয়েক জন চিকিৎসক, আইনজীবী এমনকি, প্রাক্তন আমলাও। তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি প্রীতি কিন্নর ভোটে লড়বেন গোপালগঞ্জের ভোরে আসন থেকে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন গত ৬ অক্টোবর নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে জানিয়েছে, এ বার বিহারের ২৪৩টি বিধানসভা আসনে দু’দফায় ভোট হবে। প্রথম দফার নির্বাচন হবে ৬ নভেম্বর। ওই দফায় ১২১টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। ১০-১৭ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন জমার পর তা পরীক্ষা হবে ১৮ অক্টোবর। প্রথম দফার ভোটের প্রার্থীরা নাম প্রত্যাহার করতে পারবেন ২০ অক্টোবর পর্যন্ত। ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় মোট ১২২টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। ওই দফার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে ১৩ অক্টোবর। ২০ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন জমা করা যাবে। ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত প্রার্থীরা চাইলে নাম তুলে নিতে পারবেন। ভোটগণনা হবে ১৪ নভেম্বর। এ বারের ভোটেও মূল লড়াই এনডিএ বনাম আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের মহাগঠবন্ধনের মধ্যে।