বর্ষার মরসুম চলে যাওয়ার সময় হয়ে এলেও উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্য জুড়ে বৃষ্টি থামছেই না। তার জেরে বিভিন্ন রাজ্যে মেঘভাঙা বৃষ্টি, ধস, বন্যা পরিস্থিতির কারণে সতর্কতা জারি হয়েছে।
প্রবল বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত পঞ্জাবের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় এখনও পর্যন্ত সেখানে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাজারেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবার চিন সফর সেরে দেশে ফিরেই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মানের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
দিল্লিতে সোমবারের পর যমুনার জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে থাকায় বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় রাজধানীতে প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে জাতীয় আবহাওয়া দফতর। জারি রয়েছে কমলা সতর্কতাও।
টানা বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট ডুবে বিপর্যস্ত গুরুগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। সোমবারের বৃষ্টির পরে শহরের বহু রাস্তায় হাঁটু জল জমে যায়। তার জেরে এ দিন গুরুগ্রাম-জয়পুর জাতীয় সড়কে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। সমাজমাধ্যমে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা সেই গাড়ির সারির ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। গুরুগ্রামে বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা ও ‘অকর্মণ্য’ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উপচে পড়েছে।
এক নেটিজেন লিখেছেন, দেশের প্রথম সারির শহরগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি কর দিতে হয় গুরুগ্রামে। অথচ সেখানে জল জমে রাস্তা নদীতে পরিণত হয়েছে। আর এক ব্যক্তির দাবি, বৃষ্টিতে নর্দমার জল উপচানো রাস্তায় দীর্ঘ তিন কিলোমিটার পায়ে হেঁটে পেরোতে হয়েছে তাঁকে। সেই অভিজ্ঞতা বিস্ফোরক পোঁতা রাস্তায় হাঁটার মতোই ভয়াবহ বলে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। আপাতত গুরুগ্রামে বেসরকারি অফিসের কর্মচারীদের যথাসম্ভব বাড়ি থেকে কাজের পরমার্শ দিয়েছে প্রশাসন। স্কুলগুলিকেও অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি ভারী বৃষ্টির জেরে জম্মু-কাশ্মীরে বৈষ্ণো দেবী মন্দিরে যাওয়ার পথে ধস নেমে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও, আবহাওয়া অনুকূল না হওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বন্ধ রয়েছে বৈষ্ণো দেবীর যাত্রাও। কবে তা ফের চালু হবে সে বিষয়ে কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। কোভিডের পরে কখনও এত দীর্ঘ সময় বৈষ্ণো দেবী যাত্রা বন্ধ রাখা হয়নি। পাশাপাশি আগামী ৪৮ ঘণ্টা রাজ্য জুড়ে আরও বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে। ঝড়বৃষ্টি, হড়পা বান, ধস— এ সবেরআশঙ্কাও রয়েছে।
উত্তরাখণ্ড ও হিমাচলের অবস্থা একই রকমের আশঙ্কাজনক। হিমাচলের কুলুতে ধসের জেরে একটি নির্মীয়মাণ বাড়ি ভেঙে যাওয়ার খবর মিলেছে। উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন জেলায় স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। নদীতে হঠাৎ জল বেড়ে যাওয়ায়, নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে বলা হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)