আমেরিকার সঙ্গে শুল্ক নিয়ে সংঘাতের মধ্যেই প্রথমে জাপান (২৯-৩০ অগস্ট) এবং তার পরে চিন সফরে (৩১ অগস্ট-১ সেপ্টেম্বর) রওনা হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে শুল্ক নিয়ে যুদ্ধ চললেও আমেরিকা-ভারত-জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে চতুর্দেশীয় অক্ষ ‘কোয়াড’কে আরও বেশি করে কাজে লাগিয়ে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি আনতে চাইছে নয়াদিল্লি তা আজ স্পষ্ট করে দিল নয়াদিল্লি। জাপান যাত্রার আগে বিষয়টি ওয়াশিংটনের উদ্দেশে ইতিবাচক বার্তা বলেও মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। পাশাপাশি, চিনে এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস এবং পহেলগাম কাণ্ড নিয়ে সরব হবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। পার্শ্ববৈঠক করবেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে।
আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী জানিয়েছেন, “বর্তমানে কোয়াডের কর্মসূচি আরও প্রসারিত হয়েছে হাতে কলমে সহযোগিতার মাধ্যমে। নিত্যনতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে নিরাপত্তা, দুর্লভ খনিজে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা চলছে কোয়াডে। সবচেয়ে বড় কথা গণবণ্টন ব্যবস্থা কী ভাবে আরও জোরদার করা যায় পরিকাঠামোর কী ভাবে উন্নতি করা যায় তা নিয়েও কথা এগোচ্ছে।” এরপরই তিনি বলেন, “ভারত এবং জাপানের কাছে এই বিষয়গুলি অগ্রাধিকার পাবে। আমরা কোয়াডের সব অংশীদারদের সঙ্গেই সহযোগিতা এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী। ভারত এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রীদের বৈঠকে কোয়াড অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।”
চিন এবং জাপানকে একই বন্ধনীতে রেখে প্রধানমন্ত্রী সফর করছেন ঠিকই, কিন্তু এই দুই রাষ্ট্রের মধ্যে জটিলতাকে এড়িয়ে যেতে চাইছে সাউথ ব্লক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির আশি বছর উপলক্ষ্যে ৩ সেপ্টেম্বর বেজিংয়ে সামরিক শোভাযাত্রা হবে। কিন্তু তার আগেই দেশে ফিরে আসছেন মোদী। তাঁর চিনে থাকার মেয়াদ এসসিও সম্মেলনের সময়টুকু। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের মতে, চিনের সঙ্গে কোনও সংঘাতে যেমন যেতে চাইছে না নয়াদিল্লি, তেমনই জাপানের সঙ্গে সম্পর্কেও যাতে কোনও ছায়াপাত না হয় সে দিকেও নজর রাখছে। জাপান এশিয়া এবং ইউরোপে তাদের অংশীদার রাষ্ট্রগুলিকে অনুরোধ করেছে ৩ সেপ্টেম্বর ওই সামরিক মহড়ায় না থাকতে। কারণ ওই শোভাযাত্রায় জাপান-বিরোধী স্বর থাকবে বলেই খবর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে চিন ছিল মিত্রশক্তির পক্ষে যারা অক্ষশক্তির (জাপান, জার্মানি, ইটালি)-র বিরুদ্ধে লড়েছিল।
প্রসঙ্গত, ভারত-জাপান বার্ষিক অধিবেশনে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন নরেন্দ্র মোদী। জাপানের অষ্টমতম সফরে এই প্রথম বার্ষিক অধিবেশনে ইশিবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চলেছেন তিনি। বিশেষ কৌশলগত অংশিদারিত্ব যেমন, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, বাণিজ্য, অর্থনীতি, প্রযুক্তি এবং আবিষ্কার-গবেষণা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে ভারত এবং জাপানের মধ্যে। এ ছাড়াও আঞ্চলিক এবং বিশ্বব্যাপী নানান বিষয়-সহ দু’দেশের মানুষের মধ্যে আদানপ্রদানের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)