১৯৬৫-’৬৬ সাল নাগাদ পূর্ব মুম্বইয়ের শহরতলিতে সিরিয়াল কিলিংয়ের ঘটনায় চাঞ্চল্য দেখা দেয়। অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীর হাতে আহত হন অন্তত ১৯ জন। তাঁদের মধ্যে মারা যান ৯ জন। সে সময় ওই এলাকায় উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরতে দেখা গিয়েছিল এক ব্যক্তিকে। সন্দেহভাজনকে আটকের পর জানা যায় তার নাম রামন রাঘব এবং পুলিশের খাতায় তার নাম আগেও আছে।
পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তা রামকান্ত কুলকার্নির নেতৃত্বে একটি দল তল্লাশি শুরু করে রামন রাঘবের সন্ধানে। মূলত সাব ইনস্পেক্টর অ্যালেক্স ফিয়ালহোর কৃতিত্বে ধরা পড়ে রামন রাঘব। ফাইল ফোটোগ্রাফ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের সাহায্যে গ্রেফতার করা হয় রামনকে। সিন্ধি ডালওয়ানি, আন্না, থাম্বি, তালওয়ানি, ভেলুস্বামী নামেও পরিচিত ছিল সে।
এর পর পুলিশকে নিয়ে মুম্বই শহরতলি ঘুরিয়ে দেখিয়েছিল রামন রাঘব। কোথায় কোথায় সে হত্যালীলা চালিয়েছিল, চিনিয়েছিল ঘাতক নিজেই। উত্তর মুম্বই শহরতলির এক জায়গায় লুকিয়ে রাখা লোহার রড সে তুলে দিয়েছিল পুলিশের হাতে। এটাই ছিল তার খুনের অস্ত্র। সেইসঙ্গে আরও জানা যায়, রামন রাঘবের অপরাধ শুরু হয়েছিল তার পরিবারেই। ধর্ষণের পরে একাধিকবার ছুরির আঘাতে নিজের বোনকে খুন করেছিল সে।
পুলিশের উদ্যোগে তার মনস্তাত্বিক বিশ্লেষণও হয়। মনোবিদরা জানান, মানসিক দিক দিয়ে রামন রাঘব সম্পূর্ণ সুস্থ। আদালতের রায়ে তার মৃত্যুদণ্ড হয়। কিন্তু শুনানি চলাকালীন ফের রামন রাঘবকে পরীক্ষা করেন সাইক্রিয়াটিস্টরা। তাঁরা জানান, রামন রাঘব ক্রনিক প্যারানয়েড স্কিজোফ্রেনিয়ার শিকার। সঙ্গে এও বলা হয়, এই মানসিক পরিস্থিতি থেকে সে আর বেরিয়ে আসতে পারবে না। প্রাণদণ্ড থেকে তার শাস্তি পরিবর্তিত হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে। কিডনি নিষ্ক্রিয় হওয়ার কারণে ১৯৯৫ সালে তার মৃত্যু হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy