বদগামে কফিনবন্দী মৃত সিআরপিএফ জওয়ানেরা।ফাইল চিত্র।
একটি সন্ত্রাসবাদী হানা। ৪৪ সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যু। কাশ্মীরে নিরাপত্তারক্ষীদের ওপর এই হামলার ঘটনা এখনও পর্যন্ত ভয়াবহতম। সিআরপিএফ জওয়ানদের মৃত্যুর রেকর্ড দেখলে এই ঘটনা সারা দেশের নিরিখে এখনও পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নাশকতা। সিআরপিএফ সব থেকে ভয়াবহ নাশকতার মুখোমুখি হয়েছিল ছত্তীসগঢ়ের দন্তেওয়াড়ায়, ২০১০ সালে। সেই দিন মাও হামলার বলি হয়েছিলেন ৭৫ জন জওয়ান।
২০১৮ সালে সব মিলিয়ে কাশ্মীরে মারা গিয়েছেন ৯১ জন জওয়ান। ২০১৪ সালে এই মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৪৭। সংখ্যাতত্ত্বের নিরিখে উপত্যকায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ল ৯৪ শতাংশ, যা একই সঙ্গে ভয়াবহ এবং উদ্বেগজনক। মনে রাখতে হবে, ৯১ জন জওয়ান মারা গিয়েছেন শুধু ২০১৮ সালেই, পুলওয়ামার ৪৪টি মৃত্যু এই তালিকায় নেই।
২০১৪-র পর ২০১৫ সালে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৩৯ জওয়ান। এর পর ২০১৬ সালে ৮২ জন এবং ২০১৭-য় ৮০ জন জওয়ান প্রাণ হারিয়েছেন কাশ্মীরে। অর্থাৎ, জওয়ানদের মৃত্যুর নিরিখে এখনও পর্যন্ত সব থেকে রক্তাক্ত বছর ২০১৮ সালই।
২০১৪-’১৮, এই সময়ের মধ্যে মোট ১৭০৮টি সন্ত্রাসবাদী হামলায় প্রাণ দিয়েছেন মোট ৩৩৯ জন জওয়ান। গত ফেব্রুয়ারিতেই লোকসভায় এই তথ্য পেশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হংসরাজ গঙ্গারাম।
আরও পড়ুন: ‘প্রতিশোধ চাই’! পাকিস্তান বিরোধী মিছিলে অগ্নিগর্ভ জম্মু, জারি কারফিউ
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত পাঁচ বছরে জঙ্গিদের মৃত্যুর ঘটনাও বেড়েছে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে। ২০১৪-য় জঙ্গিদের মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১১০। ২০১৮ সালে সেই মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫৭। সংখ্যাতত্ত্বের নিরিখে এই মৃত্যুর হারে বৃদ্ধি ১৩৪ শতাংশ। সব মিলিয়ে গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন সেনা অভিযানে মারা গিয়েছে মোট ৮৩৮ জন জঙ্গি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৫-য় ১০৮ জন, ২০১৬-য় ১৫০ এবং ২০১৭ সালে মোট ৮০ জন জঙ্গি মারা গিয়েছে বিভিন্ন সেনা অভিযানে।
এ ছাড়া সন্ত্রাসবাদী হামলার নিরিখেও শেষ পাঁচ বছরে এখনও পর্যন্ত সব থেকে রক্তাক্ত বছর ২০১৮-ই। শুধু জওয়ান এবং জঙ্গিদের মৃত্যুই নয়, ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে উপত্যকায় নাশকতার সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২২১ শতাংশ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৪ সালে ২২২টি, ২০১৫ সালে ২০৮, ২০১৬ সালে ৩২২, ২০১৭ সালে ৩৪২ এবং ২০১৮ সালে মোট ৬১৪টি সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছে উপত্যকার মাটিতে। সব মিলিয়ে শেষ পাঁচ বছরে নাশকতার সংখ্যা ১৭০৮।
আরও পড়ুন: হামলার আগে ৩ মাসের ট্রেনিং, আদিলের ছদ্মনাম ছিল মৃত জইশ কমান্ডারের নামে
অর্থাৎ, গত পাঁচ বছরের নিরিখে উত্তরোত্তর খারাপ হচ্ছে কাশ্মীর পরিস্থিতি। ২০১৮ সালের জুন মাসে ইন্ডিয়া স্পেন্ড-এ প্রকাশিত একটি রিপোর্টে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গত ২৮ বছরের একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২৮ বছরে জম্মু-কাশ্মীরে প্রাণ হারিয়েছেন মোট ৫,১২৩ জন সেনা, মৃত্যু হয়েছে ২২,১৪৩ জন জঙ্গির এবং মারা গিয়েছেন ১৩,৯৭৬ জন সাধারণ মানুষ।
গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ
তথ্যসূত্র- লোকসভা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy