অগ্নিগর্ভ জম্মু, পিছনে জ্বলছে গাড়ি, তার মধ্যেই তুমুল বিক্ষোভ। ছবি: এএফপি
পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার জেরে কার্যত জ্বলছে জম্মু। কার্ফু উপেক্ষা করেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বিভিন্ন এলাকা। বহু গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষ রাস্তায় বেরোননি। দিনভর খোলেনি দোকানপাট। পাকিস্তান বিরোধী স্লোগান, মিছিল, গাড়িতে ভাঙচুর-আগুন, জনতা পুলিশ সংঘর্ষ— বাদ গেল না কিছুই। দিনভর সংঘর্ষে জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন। জনসাধারণকে শান্ত থাকার জন্য আর্জি জানিয়েছেন পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকরা। জম্মু শহরে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী।
জম্মুর ডেপুটি পুলিশ কমিশনার রমেশ কুমার জানিয়েছেন, ‘‘আগাম সতর্কতা হিসেবে আমরা কার্ফু জারি করেছি।’’ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দু’কলাম সেনা নামানো হয়েছে শহরে। জওয়ানরা টহল দিচ্ছেন। পাশাপাশি মাইকে কার্ফুর কথা জানানো হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
বৃহস্পতিবার পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার পর জম্মু জুড়ে ছিল শোকের আবহ। এক সঙ্গে এত জওয়ানের মৃত্যুর শোকে কার্যত মূহ্যমান হয়ে পড়েছিল গোটা উপত্যকা। কিন্তু রাত পোহাতেই সেই শোক বদলে যায় ক্ষোভ-বিক্ষোভে। জম্মু শহরের জুয়েল চক, পুরানি মাণ্ডি, রেহারি, শক্তিনগর, পাক্কাডাঙা, জৈনপুর, গান্ধীনগর, বকশিনগরের মতো এলাকায় পাকিস্তান বিরোধী স্লোগান দিয়ে একাধিক মিছিল বেরোয়। কয়েকটি মিছিল থেকে ‘প্রতিশোধ চাই’ স্লোগানও শোনা গিয়েছে।
আরও পডু়ন: চার বছরে তিন বার অন্তঃসত্ত্বা, এ বার দেশে ফিরতে চায় জঙ্গি শামিমা
আরও পড়ুন: সিরিয়ার কায়দায় পুলওয়ামায় হামলা হতে পারে, আগাম জেনেও নেওয়া যায়নি ব্যবস্থা!
পুলিশ প্রশাসন দক্ষ হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করেও এক সময় কার্যত পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। একাধিক জায়গায় বহু গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। গুজ্জরনগরে বেশ কয়েকটি জায়গায় অনেকগুলি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে চলতে থাকে বিক্ষোভ। জম্মু ট্যুরিস্ট সেন্টারের সামনে একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেন্টারে উড়ে আসে ইট-পাটকেল। তাতে আতঙ্কিত হয়ে হয়ে পুলিশ প্রশাসনকে সাহায্যের আর্জি জানান সেন্টারের কর্মীরা।
জম্মুতে্ প্রতিবাদ বিক্ষোভে জ্বলছে গাড়ি। ছবি: এএফপি
কয়েকটি জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে উত্তেজিত জনতা। পাল্টা পুলিশও মোকাবিলার চেষ্টা করে। শেষ পর্যন্ত বিকেলের দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহর জুড়ে টহল দিয়েছে সেনাবাহিনী।
আরও পড়ুন: শ্রীনগরে রাজনাথ, কাঁধে নিলেন জওয়ানের কফিন
তবে এই বিক্ষোভের বাইরে সাধারণ মানুষ অবশ্য এ দিন কার্যত ঘরবন্দি ছিলেন। বিক্ষোভ-মিছিল, সংঘর্ষের ভয়ে অসুস্থতার মতো জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কার্যত কেউ বাইরে বেরোননি। স্কুল, কলেজ কার্যত বন্ধ ছিল। সকাল থেকেই দোকানপাট প্রায় একটিও খোলেনি। রাস্তায় যানবাহনও ছিল হাতে গোনা। ব্যস্ত বাজার বা জনবহুল এলাকাও এ দিন ছিল কার্যত সুনসানঅন্য দিকে হামলার প্রতিবাদে এ দিন জম্মু আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশন সমস্ত কাজকর্ম বন্ধ রাখে। ফলে আদালতে কোনও শুনানি হয়নি।
(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy