পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদল। —ফাইল চিত্র।
১৯৯৩ সালে দিল্লিতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত খলিস্তানি জঙ্গি দেবিন্দর পাল সিংহ ভুল্লরের মুক্তির দাবি তুললেন পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদল। রাইসিনা রোডে যুব কংগ্রেসের সদর দফতরের সামনে ওই বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৯ জন। শরীরে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে যাঁরা প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন যুব কংগ্রেসের তৎকালীন সভাপতি মনিন্দর জিৎ সিংহ বিট্টা। পঞ্জাবে ভোটের মুখে সেই ভুল্লরকেই দ্রুত জেল থেকে বের করার দাবি তুলেছেন শিরোমনি অকালি দলের নেতা বাদল।
খলিস্তান লিবারেশন ফোর্সের জঙ্গি ভুল্লরের মুক্তির বিষয়টি নিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের কোর্টে বল ঠেলে দিয়েছেন বাদল। কেজরীওয়ালের উদ্দেশে গতকাল তিনি বলেছেন, ‘‘ভুল্লরকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে রাজনৈতিক সুবিধার দিকে তাকালে চলবে না। সাম্প্রদায়িক গোড়ামি দেখানোও উচিত নয় তাঁর। কারণ, পঞ্জাবে শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সুসম্পর্কের দিকে তাকিয়ে ভুল্লরকে মুক্তি দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।’’ বাদল যুক্তি দিয়েছেন, ‘‘সাজার পুরো সময়টাই জেলে কাটিয়ে দিয়েছেন ভুল্লর, ফলে এ বার তাঁকে মুক্তি দিতে এক মিনিটও সময় নষ্ট করা উচিত নয়।’’
বোমা বিস্ফোরণে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ২০০১ সালে বিশেষ টাডা আদালত ভুল্লরকে ফাঁসির সাজা দিয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট ফাঁসির বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। আবার ২০১৯ সালে গুরু নানকের ৫০০ বছর পূর্তিতে যে আটজন শিখ কয়েদিকে বিশেষ কারণে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার, সেই তালিকায় নাম ছিল ভুল্লরের। তবে কয়েকটি শিখ সংগঠনের অভিযোগ, দিল্লিতে আম আদমি পার্টির সরকার ভুল্লরকে জেল থেকে বের হওয়ার ছাড়পত্র দিচ্ছে না। কয়েকদিন আগে কেজরীওয়াল সরকারের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ এনেছে শিরোমনি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি। এই দাবি তোলার পাশাপাশি ভুল্লরের শারীরিক অসুস্থতার কথা টেনে এনেছেন বাদল। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেছেন, শুধু আইনি প্রশ্নই নয়, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি বিবেচনা করে ভুল্লরকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
বিভিন্ন সমীক্ষায় ইঙ্গিত, পঞ্জাবে এ বার ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে আপের। এই পরিস্থিতিতে ভুল্লরের মুক্তির বিষয়টিকে কেজরীওয়ালের কোর্টে ঠেলে দিয়েছেন অকালি দলের নেতা। বাদলের কথায়, ‘‘ভুল্লরের মুক্তিতে কী কারণে বাধা দিচ্ছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী, বুঝতে পারছি না। যত দিন তার সাজা পাওয়ার ছিল, তার থেকেও বেশি সময় সে জেলে কাটিয়েছে। ফলে ভুল্লরকে বন্দি রাখার কোনও নৈতিক বা আইনি দিক বেঁচে নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy