Advertisement
E-Paper

কানুপ্রিয়ার জয়ে ধাক্কা পঞ্জাবের পুরুষতন্ত্রে

শুধুই কানুপ্রিয়া? সপাটে পাল্টা জবাব, ‘‘পদবি ব্যবহার করি না। ওর মধ্যে জাতপাতের গন্ধ রয়েছে।’’ 

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৩০
কানুপ্রিয়া। —ফাইল চিত্র।

কানুপ্রিয়া। —ফাইল চিত্র।

শুধুই কানুপ্রিয়া? সপাটে পাল্টা জবাব, ‘‘পদবি ব্যবহার করি না। ওর মধ্যে জাতপাতের গন্ধ রয়েছে।’’

পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই প্রথম ছাত্র সংসদের সভানেত্রী পদে কোনও ছাত্রী ভোটে জিতেছেন। হরকিষেণ সিংহ সুরজিতের রাজ্য পঞ্জাবে তাঁর দল সিপিএম বা অন্য কমিউনিস্ট পার্টিকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। সেই পঞ্জাবের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন ‘স্টুডেন্টস ফর সোসাইটি’-র কানুপ্রিয়ার জয়ের পর ক্যাম্পাসে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, ‘কুড্ডি কিভেই জিক গয়ি?’ (কী ভাবে জিতে গেল মেয়েটা!)

পুরুষতন্ত্রের দাপট কী ভাবে ভাঙলেন? কানুপ্রিয়া ফোনে বলেন, ‘‘এই নিয়ে তৃতীয় বার আমাদের সংগঠন কোনও মেয়েকে সভানেত্রী পদে প্রার্থী করেছিল। সবাই বলত, মেয়েদের দাঁড় করাই বলে আমরা হেরে যাই। মুখের উপরেই অনেকে বলেছে, মেয়েরাই তো মেয়েদের ভোট দেয় না। কিন্তু প্রচারের সময় হস্টেলে ঘুরে কথা বলে দেখেছি, সব ভুল কথা!’’

ভগৎ সিংহের আদর্শে তৈরি ‘স্টুডেন্টস ফর সোসাইটি’ নিজেদের বামপন্থী বলে দাবি করলেও, সিপিএম বা অন্য কোনও কমিউনিস্ট পার্টির শাখা সংগঠন নয় তারা। কানুপ্রিয়া বলেন, ‘‘আমাদের দলে মার্কস-ভক্ত রয়েছে। নাস্তিক যেমন রয়েছে, ধার্মিকেরাও রয়েছে। সব মতের ছেলেমেয়েই রয়েছে। আমরা জাতপাত, ধনী-গরিবের ঊর্ধ্বে উঠে সাম্যের কথা বলি। সেই অবস্থান থেকেই আমরা বামপন্থী।’’ পঞ্জাবে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোটেও দেদার টাকা ছড়ানো, ডিস্কো-থেকে পার্টি, পাহাড়ে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার চল অনেক দিনের। কানুপ্রিয়া বলেন, ‘‘আমরা ও সবে না-থেকে মেয়েদের যৌন হেনস্থা, হস্টেলের সমস্যা, ফি বৃদ্ধি নিয়ে লড়াই করি। ডাফলি বাজিয়ে গান করি, পথনাটক করি।’’

এ দেশে কমিউনিস্ট পার্টির কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন করলে এড়িয়ে যান কানুপ্রিয়া। ‘‘ওঁদের সম্পর্কে খুব কম ধারণা। না জেনে কিছু বলা ঠিক নয়। তবে শুনেছি, আমি জেতায় কমিউনিস্ট পার্টির নেতারাও খুশি হয়েছেন।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রাজ কুমার এবং সিংহভাগ শিক্ষক-শিক্ষিকা যে খুশি হননি, তা-ও জানেন কানুপ্রিয়া। তাই বিজেপি-আরএসএস-এর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত উপাচার্যের জন্য লক্ষণরেখাও টেনে দিচ্ছেন কানুপ্রিয়া। বলেন, ‘‘এখানে এবিভিপি জিতলে বিজেপি-আরএসএস পঞ্জাব জয় করে ফেলেছে বলে প্রচার করত। কিন্তু উপাচার্য যেন ছাত্র সংসদে নাক না-গলান। আরএসএস অন্য বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণ করুক, পঞ্জাব নয়।’’

জুলজি-তে স্নাতক স্তরে ভর্তি হওয়ার পর যৌন হেনস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনে প্রথম জড়িয়ে পড়েছিলেন কানুপ্রিয়া। এখন এমএসসি-র প্রথম বর্ষে ছাত্র সংসদের সভানেত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর দাবি, মেয়েদের ২৪ ঘণ্টা হস্টেলে ঢুকতে-বেরোতে দিতে হবে। কানুপ্রিয়ার যুক্তি, ‘‘তালা বন্ধ করে রেখে কি মেয়েদের সুরক্ষা দেওয়া যায়? মানসিকতা বদলাতে হবে!’’

‘বামপন্থী’ রাজনীতিতে বাবা-মা বাধা দেননি? কানুপ্রিয়ার জবাব, ‘‘ওঁরা রাজনীতির লোক নন। তাই প্রথমেই বুঝিয়ে বলেছিলাম, কী রাজনীতি করছি। তার পরে উৎসাহই মিলেছে।’’

Kanupriya Punjab University কানুপ্রিয়া পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy