রাস্তার ধারে খোলা মাঠে প্লাস্টিকের শিট ও কার্ডবোর্ডে শুয়ে রয়েছেন বহু রোগী, গাছ থেকে ঝুলছে আই ভি ফ্লুইডের বোতল! এভাবেই কোভিড-১৯ অতিমারির চিকিৎসা চলছে মধ্যপ্রদেশের আগর-মালওয়া জেলায়। এক টেলিভিশন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এই খবর।
সরকারি হাসপাতালে যেতে নারাজ স্থানীয় মানুষ বেছে নিয়েছেন এলাকার হাতুড়ে ডাক্তারদের এই বিপজ্জনক চিকিৎসা ব্যবস্থা। সঠিক ওষুধ বা বিদ্যুৎ কোনও কিছুরই ব্যবস্থা নেই, নেই নূন্যতম সামাজিক দূরত্ববিধির পালন। মাস্ক পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না বেশিরভাগ মানুষের মুখে। ওই সংবাদমাধ্যম সূত্রে এই খবর প্রচারিত হওয়ায় স্বভাবতই প্রশ্নের মুখে পড়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
আগর-মালওয়া জেলার ধনিয়াখেড়ি গ্রামের কাছে হাইওয়ে থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে এক কমলালেবুর বাগানে ধরা পড়েছে এই দৃশ্য। আশপাশের ১০টি গ্রামের মানুষ করোনা সংক্রামিত হলে এখানেই আসছেন চিকিৎসার জন্য। অথচ জায়গাটি মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এলাকার গ্রামবাসীরা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যেতে ভয় পাচ্ছেন। তাঁদের দাবি, সরকারি হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডের অব্যবস্থায় মৃত্যু হচ্ছে অনেকের। ফলে তাঁরা নিরাপদ বোধ করছেন না।
স্বাভাবিক ভাবেই কোভিড উপসর্গ থাকলে হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শই বারবার দিচ্ছেন উদ্বিগ্ন স্থানীয় প্রশাসন। এলাকার ব্লক মেডিক্যাল অফিসার মণীশ কুরিল ওই টেলিভিশন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘সরকারের অবিলম্বে এই সমস্ত হাতুড়ে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ। আর সকলের প্রতি অনুরোধ, কোভিডের লক্ষণ দেখা দিলে সঠিক চিকিৎসাপদ্ধতি মেনে চলুন। নয়তো বড় দেরি হয়ে যাবে।’
চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডক্টর সমন্দর সিংহ মালব্য ঘটনাস্থলে তদন্তকারী দল পাঠালে দেখা যায় ডাক্তার বা রোগী কারোরই চিহ্ন নেই, অকুস্থলে কিছু খালি ওষুধের শিশি পড়ে রয়েছ। তবে যে বাগানে এই ‘মেঠো’ চিকিৎসাপদ্ধতি চলছিল সেটির মালিক হাতুড়ে ডাক্তারের পরিচয় জানা গিয়েছে। তিনি সহ বাকিদের নামে এখনও পর্যন্ত চারটি অভিযোগ জমা পড়েছে পুলিশের কাছে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮২ জন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন আগর-মালওয়া জেলায়। সবমিলিয়ে মোট অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা এখন ৪৯২।