Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Coromandel Express accident

রেল নিরাপত্তা কমিশন স্বাধীন নয়, উঠছে প্রশ্ন

কংগ্রেসের অভিযোগ, রেলের সিএজি রিপোর্টেও সরকারের গাফিলতির দিকে আঙুল তোলা হয়েছে। এক সময়ে সিএজি রিপোর্ট নিয়ে ইউপিএ সরকারের মন্ত্রীদের ইস্তফা চাওয়া হত।

An image of the accident

ওড়িশার রেল দুর্ঘটনার পরে এ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কংগ্রেস, আম আদমি পার্টির সাংসদরা। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৩ ০৯:১৫
Share: Save:

সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সামনে এসে রেলের নিরাপত্তা কমিশন অভিযোগ করেছিল, তাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই রেলের নিরাপত্তা দেখার ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। রেল বোর্ড নানা নিয়মের সংশোধন করে চলেছে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধি না মানার জন্য বিজেপি সাংসদেরই নেতৃত্বাধীন সংসদীয় স্থায়ী কমিটি রেল বোর্ডকে তোপ দাগে। তার পরেও রেল মন্ত্রকের টনক নড়েনি। ওড়িশার রেল দুর্ঘটনার পরে আজ এ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কংগ্রেস, আম আদমি পার্টির সাংসদরা।

কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ, পরিবহণ, পর্যটন, সংস্কৃতি মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শক্তিসিংহ গোহিল আজ অভিযোগ তুলেছেন, গত ডিসেম্বরে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির রিপোর্টে রেল বোর্ডের সমালোচনা করা হয়েছিল। কারণ রেল বোর্ড রেলের দুর্ঘটনার তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত রেল নিরাপত্তা কমিশনের সুপারিশ মানছে না। রেল নিরাপত্তা কমিশন এখন বিমান মন্ত্রকের প্রশাসনিক অধীনে। কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রকের আওতা থেকে বের করে রেল নিরাপত্তা কমিশনকে স্বাধীন সংস্থা তৈরির সুপারিশ করা হয়। কিন্তু তা করা হয়নি। মাত্র ৮-০ শতাংশ দুর্ঘটনার তদন্ত রেল নিরাপত্তা কমিশনকে দিয়ে করানো হয়েছে। বাকি দুর্ঘটনার তদন্ত রেল নিজেই করেছে।

গোহিল বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দোষীকে মাফ করা হবে না। দোষী মোদী সরকার নিজেই। ২০১৮-তে রেলের নিরাপত্তা কমিশন, মুখ্য রেল নিরাপত্তা কমিশনের কাছে যে ক্ষমতা ছিল, তা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কমিশনের সঙ্গে আলোচনা না করে এই সিদ্ধান্ত হয়। কমিশন সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছিল, নিরাপত্তার জন্য এটা ভাল নয়। কিন্তু সরকার কমিশনের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে বলছে, আমিই চোর, আমিই কোতোয়াল, আমিই বিচারক।’’ রেল বোর্ডের সদস্য (অপারেশন) জয়া বর্মা সিন্‌হার যুক্তি, তদন্তের প্রশ্নে কোনও ধরনের গাফিলতি করা হয় না। অন্যান্য দুর্ঘটনার মতোই এ ক্ষেত্রেও তদন্তের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য তদন্ত ভার রেলের নিরাপত্তা কমিশনারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। যা কেন্দ্রীয় বিমান মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন। রেলের বক্তব্য, যাত্রী নিরাপত্তাই মন্ত্রকের প্রাধান্য। তাই তদন্তের প্রশ্নে কোনও আপস করা হয় না।

কংগ্রেসের অভিযোগ, রেলের সিএজি রিপোর্টেও সরকারের গাফিলতির দিকে আঙুল তোলা হয়েছে। এক সময়ে সিএজি রিপোর্ট নিয়ে ইউপিএ সরকারের মন্ত্রীদের ইস্তফা চাওয়া হত। মোদী জমানায় সিএজি রিপোর্ট বলছে, প্রাণঘাতী রেল দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে। শেষ মুহূর্তে দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া ঘটনার সংখ্যাও বেড়েছে। ট্রেন বেলাইনের সবচেয়ে বড় কারণ রেল লাইনের ঠিক মতো দেখভাল না হওয়া। ২০২২ সালের সিএজি রিপোর্টে বলা হয়েছে, রেল লাইনের অবস্থা খতিয়ে দেখা, দুর্ঘটনার পরে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়া ও গ্রহণ করা, জরুরি প্রয়োজন মেটাতে রেল খাতে বরাদ্দ ব্যবহার করা, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কর্মীর সংখ্যার মতো ক্ষেত্রে গুরুতর খামতি রয়েছে। সিএজি জানায়, ‘ট্র্যাক রেকর্ডিং কার’-এর মাধ্যমে লাইনের ভৌগোলিক ও গঠনগত অবস্থা খতিয়ে দেখার কাজে ৩০-১০০ শতাংশ খামতি হয়েছে। অনলাইনে লাইনের অবস্থা খতিয়ে দেখতে রয়েছে ‘ট্র্যাক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ নামে ওয়েব অ্যাপ। কিন্তু সিএজি রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘ট্র্যাক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ পোর্টালে লাইনের উপরে নজরদারির অনলাইন ব্যবস্থা সক্রিয় নেই বলে দেখতেপান অডিটরেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE