দিল্লির বুকে লাল কেল্লার সামনে গাড়ি বিস্ফোরণ। প্রশ্নে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের গোয়েন্দা-ব্যর্থতা। দিল্লি পুলিশও সেই মন্ত্রকের অধীন। বিরোধীদের এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ না দিয়েই মোদী সরকার সংসদের শীতকালীন অধিবেশন পার করে ফেলল।
মাত্র ১৫ দিনের শীতকালীন অধিবেশন। ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু, শুক্রবার বেলা ১১টার একটু পরেই শেষ। বিরোধীদের অভিযোগ, দিল্লির দূষণ নিয়ে আলোচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েও কেন্দ্র তা এড়িয়ে গেল। বিজেপি শিবির মুচকি হাসছে। কারণ বন্দে মাতরম্, এসআইআর, ‘বিকশিত ভারত জি রাম জি’ বিল নিয়ে বিরোধীদের ব্যস্ত রেখে লাল কেল্লা থেকেই নজর সরানো গিয়েছে।
এক মন্ত্রী বলছিলেন, ‘‘লাল কেল্লার বিস্ফোরণের ঘটনা ছিল বিরোধীদের হাতে সব থেকে বড় অস্ত্র। কারণ এখানে সরকারের দ্বিতীয় শীর্ষ ব্যক্তিত্বের দিকে অভিযোগের আঙুল। কিন্তু বিরোধীরা বন্দে মাতরম্-এর অংশ বাদ দিয়ে জওহরলাল নেহরু দেশভাগের বীজবপন করেছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তোলা অভিযোগ ভুল প্রমাণ করতে ব্যস্ত ছিল। তার পরে রাহুল গান্ধীর ভোট চুরির অভিযোগ সত্যি প্রমাণ করতে কংগ্রেস এসআইআর নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। শেষ সপ্তাহে আচমকা ‘জি রাম জি’ বিল আসায় বিরোধীরা চমকে যায়। কারণ এর কোনও খবরই ছিল না।’’
অধিবেশন শুরুর আগে কংগ্রেসের গৌরব গগৈ সর্বদল বৈঠকে লাল কেল্লার বিস্ফোরণের প্রেক্ষিতে রাজধানীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রথমে আলোচনা চেয়েছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস এসআইআর নিয়ে সরকারের সঙ্গে দর কষাকষিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বিনিময়ে সরকারও বন্দে মাতরম্ নিয়ে আলোচনায় বিরোধীদের রাজি করিয়ে ফেলে। এর পরে রাহুল দূষণ নিয়ে আলোচনার দাবি তোলেন। প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা নোটিস দেন। সরকার আলোচনা হবে বলে ঘোষণা করলেও ‘জি রাম জি’ বিল পাশের পরে লোকসভা মুলতুবি হয়ে যায়। শুক্রবারও সকালে দু’মিনিটের মধ্যে অধিবেশনে ইতি টেনে দেন স্পিকার ওম বিড়লা। প্রিয়ঙ্কার অভিযোগ, মোদী সরকার শেষ বেলায় সমস্ত বিল এনে দ্রুত পাশ করিয়ে নিচ্ছে।
কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের অভিযোগ, মোদী সরকার সংসদে ‘বুলডোজ়ার’ চালাচ্ছে। অধিবেশনের আগে যে সব বিল আসবে বলে জানানো হচ্ছে, তা আসছে না। শেষ বেলার ব্রহ্মাস্ত্রের মতো কিছু বিল গোপন ঝুলি থেকে বার করা হচ্ছে। তার পরে মধ্যরাতে বিল পাশ করানো হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)