E-Paper

কী হল মোদীর মণিপুর সফরে, প্রশ্ন উভয় পক্ষেরই

মোদীর সফরের পরেই, সোমবার কুকি-জ়ো যৌথ মঞ্চ বিবৃতি জানাল, চুক্তি নিয়ে ভ্রান্ত দাবি ও ভুল ব্যাখ্যা করেছে কেন্দ্র। তারা ২ নম্বর জাতীয় সড়কে অবাধ চলাচলের অনুমতি দেয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৫:৫০
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

২৮ মাস পরে কুকি ও মেইতেই এলাকায় জনসভা করতে এসে সমাধান সূত্র দূরে থাক, উল্টে জটিলতা বাড়িয়ে দিয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মেইতেই মহিলা সংগঠন প্রশ্ন তুলল, “যেখানে নিজেদের রাজ্যে চলাফেরার স্বাধীনতা নেই, সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানানো হল কেন?” এ দিকে, মোদী রাজ্য ছাড়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই কুকি-জ়ো কাউন্সিল জানাল, “জাতীয় সড়কে অবাধ চলাচল চলবে না। মেইতেইরা আমাদের এলাকায় ঢুকতে পারবে না।”

সম্প্রতি দিল্লিতে কুকি জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি নবীকরণের পরে কেন্দ্র বিবৃতি দিয়ে বলেছিল, কুকিরা আলোচনার মাধ্যমে শান্তি স্থাপন ও জাতীয় সড়ক অবরোধমুক্ত করায় রাজি হয়েছেন। কিন্তু মোদীর সফরের পরেই, সোমবার কুকি-জ়ো যৌথ মঞ্চ বিবৃতি জানাল, চুক্তি নিয়ে ভ্রান্ত দাবি ও ভুল ব্যাখ্যা করেছে কেন্দ্র। তারা ২ নম্বর জাতীয় সড়কে অবাধ চলাচলের অনুমতি দেয়নি। শুধু জাতীয় সড়কে যাত্রীদের নিরাপত্তা রক্ষায় কাংপোকপির জনগণকে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করতে বলেছে। তারা স্পষ্ট বলে দেয়, মেইতেই ও কুকি-জ়ো সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাতের কোনও মীমাংসা বা চুক্তি না হওয়ায়, উভয় পক্ষেরই বাফার এলাকা অতিক্রম করা উচিত নয়। স্থিতাবস্থা লঙ্ঘন করলে গুরুতর পরিণতি হবে।

বস্তুত ফের অশান্তি হয়েছে চূড়াচাঁদপুরে। মোদীর সফরের জন্য সাজানো পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে আগুন লাগানো ও পরে থানা আক্রমণের ঘটনায় চূড়াচাঁদপুর পুলিশ অনেককে আটক করেছিল। বাকিদের ছাড়লেও থানায় হামলা করা ২ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করায় অশান্তি চলছে। গত কাল দিনভর সংঘর্ষ, পথ অবরোধের পরে, রাতে কুকি-জ়ো নেতাদের বাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। কেএনও সংগঠনের ‘বিদেশসচিব’ কেলভিনের বাড়ি পোড়ানো হয়। কুকি-জ়ো কোঅর্ডিনেশন কমিটির মুখপাত্র গিনঝা ভুয়ালজং-এর বাড়িতেও হামলা হয়। পরে সেনারা বাড়িটি ঘিরে ফেলে। উচ্চ সতর্কতা জারি রয়েছে চূড়াচাঁদপুরে। নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে টহল দিচ্ছে।মেইতেই মহিলা সংগঠন ইমাজি মেইরার ক্ষোভ, “যেখানে নিজেদের রাজ্যে মণিপুরিদের চলাফেরার স্বাধীনতা নেই, সেখানে কেন ভিত্তিতে মোদীতে স্বাগত জানানো হল?” সংগঠনের মুখপাত্র থকচম সুজাতা বলেন, “কুকি বিধায়কেরা আলাদা প্রশাসনের দাবিতে অনড় রয়েছেন। আমাদের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কী দাবি করেছেন, তা জানানো হোক।” সংগঠনটি ১০ দিনের চরমসীমা বেঁধে দিয়ে ঘোষণা করে, জাতীয় সড়কে অবাধ চলাচল ফের চালু করা, বাস্তুচ্যুতদের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া ও শর্ত ভাঙা কুকিদের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি বাতিল না করা হলে আন্দোলনে নামবে তারা।

বিজেপির কুকি বিধায়ক পাওলিয়েনলাল হাওকিপ বলেন, “মানুষ আশা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী আমাদের কথা শুনতে এসেছেন। কিন্তু আমাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শোনার জন্য তিনি ১০ মিনিটও সময় দিলেন না। এমনকী দলীয় বিধায়কদের সঙ্গেও কথা বললেন না। তাহলে কি এই সফর শুধুই জনসম্পদের অপচয় ও দেখনদারি?’’

অসম প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভায় কংগ্রেসের উপদলনেতা গৌরব গগৈ প্রধানমন্ত্রীর মণিপুর সফরকে কটাক্ষ করে বলেন, “রাজ্যের সঙ্কট সমাধান করা নয়, নিজের ভাবমূর্তি গড়তে এসেছিলেন মোদী। তিনি মানুষের ক্ষত সারানোর বদলে বরং তাতে নুন ছিটিয়ে দেন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

PM Narendra Modi Manipur Violence Manipur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy